বিনোদন

বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক নিয়ে যা বললেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রস্তাবিত সেই চলচ্চিত্রের পরিচালক নির্বাচন করা হয়েছে ভারতের শ্যাম বেনেগালকে। তালিকায় ছিল ভারতের গৌতম ঘোষ ও কৌশিক গাঙ্গুলীর নামও। তবে বাংলাদেশ শ্যাম বেনেগালকে নির্বাচন করেছে।

Advertisement

সোমবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনভিত্তিক ছবি নির্মাণ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘এই চলচ্চিত্র নির্মাণে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষজ্ঞ টিম থাকবে। এই টিমে চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ থাকবেন। বঙ্গবন্ধুকে চেনেন-জানেন, তার রাজনৈতিক সহকর্মী ছিলেন এমন একজন থাকবেন এবং ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে চেনেন এমন একজন থাকবেন। চলচ্চিত্র নির্মাতা বা তাদের টিম যে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা চাইতে পারবেন।’

এই টিম গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘এছাড়া চলচ্চিত্র নির্মাণে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও একজন চলচ্চিত্রকর্মী থাকবেন।’

Advertisement

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতার জীবন নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। দেরিতে হলেও গত বছরের ৮ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে দুই দেশের যৌথ প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের চুক্তি হয়।’

‘ওই চুক্তির শর্তানুযায়ী একটি জয়েন্ট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে বাংলাদেশের ১০ ও ভারতের ৯ জন সদস্য রয়েছেন। গত ৯ জুলাই নয়াদিল্লিতে জয়েন্ট কমিটির প্রথম সভা হয়। সেখানে ভারত চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য তিনজন পরিচালকের নাম প্রস্তাব করে।’

তারানা হালিম বলেন, ‘আমরা মনে করি তিনজনই স্বনামে খ্যাত, তারা প্রতিভাবান। কিন্তু আমরা শ্যাম বেনেগালকে নির্বাচন করেছি।’

শ্যাম বেনেগালের নাম প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি পুরস্কারের মধ্যে পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া তিনি নেতাজী সুভাষ বসুর উপর জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।’

Advertisement

চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিক মানের হবে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘এই ছবিটির মানের প্রশ্নে কোনো রকম সমঝোতা করতে রাজি নই আমরা। পরিচালকই কলাকুশলী নির্বাচন করবেন। পরিচালক চলচ্চিত্র নির্মাণে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবেন। দুই দেশের বাইরে থেকেও কলাকুশলী নির্বাচন করতে পারবেন, সেই স্বাধীনতাটা পরিচালকের ওপর থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের বিষয়েও পরবর্তী মিটিং বাংলাদেশে হওয়ার কথা। সেখানে আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পরিচালকের নাম প্রস্তাব করব। তারাও (ভারত) হয়তোবা করবেন। সেই মিটিংয়ে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’

বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে বাংলাদেশে যে কোনো মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে তথ্য মন্ত্রণালয় সকল প্রকার সহযোগিতা দেবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। সেই সময়টাকে টার্গেট করেই ছবির কাজ শেষ করতে চাই। যেহেতু আমরা মানের ক্ষেত্রে কোনো সমঝোতা করব না, তাই সময়টি হয়তো এর চেয়ে বেশি লেগে যেতে পারে।’

পরিচালক চলচ্চিত্রটির বাজেট নির্ধারণ করবেন জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘সেই বাজেট ধরে আমাদের এগোতে হবে। চলচ্চিত্রটির খরচ উভয় দেশ বহন করবে। তবে বড় অংশটি বাংলাদেশ সরকার বহন করার প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার খরচের ৮০ শতাংশ বহন করতে চায়।’

ভারত ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে। তাদের হাতে বঙ্গবন্ধু সুরক্ষিত থাকবে কি না- এ বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘এটা আপনাদের নিশ্চিত করে রাখতে পারি- চলচ্চিত্রের যে পান্ডুলিপিটি হবে সেটি বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে দেখিয়ে আমরা কাজ শুরু করতে চাই। বিতর্কের কোনো সুযোগই থাকবে না।’

আরএমএম/এলএ/পিআর