ফরিদপুর পৌরসভার উদ্যোগে নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। প্ল্যান্টটি পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় নির্মাণ কাজ শেষ হলেও চালু করা যাচ্ছে না। ফলে শহরবাসী বিশুদ্ধ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে পরিবেশ অধিদফতর বলছে ঢাকা থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।
Advertisement
জেলার গোয়ালচামট এলাকায় শেখ রাসেল পৌর শিশুপার্কের পাশে ৩৭টি শহরের পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ওয়াটার প্ল্যান্টটি নির্মাণ করা হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ২০১৩ সালে প্ল্যান্টটির নির্মাণকাজ শুরু করে। প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্ল্যান্টটির নির্মাণকাজ এ বছরের জুন মাসে শেষ হয়।
ফরিদপুর পৌরসভায় দৈনিক পানির চাহিদা ১ কোটি ৮০ লাখ গ্যালন। চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে পৌরসভায় দৈনিক ১ কোটি ৩০ লাখ গ্যালন পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন এ প্ল্যান্ট থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৩ লাখ গ্যালন পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ফরিদপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল আলম জানান, প্ল্যান্টটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এটি চালুর পর ভুগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে তা ছয়টি স্তরে পরিশোধন করে সরবরাহ করা যাবে। তিনি বলেন, এ প্ল্যান্ট থেকে প্রতি ঘণ্টায় সাড়ে তিন লাখ গ্যালন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
Advertisement
ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পৌরবাসী বিশুদ্ধ পানির সমস্যার মধ্যে রয়েছে। আমরা পৌরবাসীর প্রতিদিনের পানির চাহিদা মেটাতে পারছি না। তবে এ প্ল্যান্টটি চালু হলে পৌরবাসীর পানির এ সংকট দূর করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, প্ল্যান্টটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের কাছ থেকে এটি বুঝে নেয়ার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছি। কিন্তু পরিবেশ অধিদফতর ছাড়পত্র না দেয়ায় আমরা কাজ শুরু করতে পারছি না।
‘এটি তো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান নয়’ প্রশ্ন রেখে মেয়র বলেন, পানির প্ল্যান্ট চালু করতে কেন পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র লাগবে তা আমরা বুঝে ওঠতে পারছি না। তারপরও আমরা ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছি। এরপরও পরিবেশ অধিদফতর এ বিষয়ে গড়িমসি করছে। তিনি বলেন, ছাড়পত্রের জটিলতা নিয়ে গত মাসে জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে গত ১৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমরা ছাড়পত্র পাইনি। এ দিকে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় বিদ্যুৎ বিভাগ আমাদের সংযোগ দিচ্ছে না।
ফরিদপুর ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২) মো. মোরশেদ আলম বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না পাওয়ায় আমরা এই ওয়াটার প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারছি না। ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে যত দ্রুত সম্ভব সংযোগ দেয়া হবে।
ফরিদপুর পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. লুৎফর রহমান বলেন, যেহেতু প্ল্যান্টের পানির জোগান ভূগর্ভস্থ পানি এ জন্য পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন। কেননা ভূগর্ভস্থ পানি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে বিরাট ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সরেজমিনে প্ল্যান্টটি পরিদর্শন করে এ বিষয়ে ছাড়পত্র দেয়ার সুপারিশ করে ঢাকায় আমাদের প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করছি এ মাসের মধ্যে ঢাকার অনুমোদন পেয়ে যাবো।
Advertisement
আরএ/জেআইএম