এক ভিক্ষুককে সাহায্য করতে গিয়ে তারই ৩ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় আড়াই কোটি) হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে। ভিক্ষুক ব্যক্তির সততায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তার জন্য ৪ লাখ ডলার (৩ কোটি ৩২ লাখ) ফান্ডের ব্যবস্থা করেছিলেন ওই যুগল।
Advertisement
কিন্তু পরে অভিযোগ ওঠে, সেই ফান্ডের সিংহভাগটাই ওই ব্যক্তিকে না দিয়ে তারা নিজেরাই হাতিয়ে নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। শুক্রবার ওই ভিক্ষুক এ অভিযোগ করেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ভিক্ষুক ব্যক্তির সঙ্গে দম্পতির পরিচয় ২০১৭ অক্টোবরে। সেই রাতটা এক ভয়ঙ্কর রাত ছিল কেট ম্যাকক্লুলার (ওই দম্পতিরই একজন) কাছে। ফিলাডেলফিয়ার রাস্তায় গভীর রাতে তার গাড়ির জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে কোনো টাকাও ছিল না। খুব বাজেভাবে ফেঁসে গিয়েছিলেন কেট। একেতো নারী, তার ওপর এই গভীর রাতে রাস্তায় মাঝে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এমন সময় জনি ববিট নামের ওই ভিক্ষুক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
কেটকে গাড়ির দরজা বন্ধ করে ভেতরে বসতে বলেন ববিট। তারপর তার ভিক্ষাবৃত্তির সমস্ত উপার্জন দিয়ে সাহায্য করেন কেটকে। পকেট থেকে ২০ ডলার বার করে নিজেই কেটের গাড়ির জন্য জ্বালানি কিনে আনেন।
Advertisement
ববিটের সেই মহৎ হৃদয়ের কথা ভোলেননি কেটও। পরদিনই স্বামী মার্ক ডি’আমিকোকে নিয়ে ববিটের কাছে হাজির হন। ববিটকে সাহায্য করার জন্যই তারা একটি ফান্ডের ব্যবস্থা করে ফেলেন। ববিটকে সাহায্য করতে ইচ্ছুক যে কেউই এই ফান্ডের মাধ্যমে টাকা পৌঁছে দিতে পারেন তার কাছে। প্রথমে খুব একটা অর্থ না এলেও ববিটের এই গল্প কয়েকটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। আর তারপরই হু হু করে বাড়তে থাকে ফান্ডমানি। কয়েক মাসের মধ্যেই ববিটের নামে ৪ লাখ ২ হাজার ডলার (৩ কোটি ৩৪ লাখ) অর্থ সাহায্য জমা হয় ফান্ডে।
কিন্তু যাকে সাহায্য করার জন্য ফান্ডের ব্যবস্থা করেছিলেন দম্পতি, সেই ববিটই এখন উল্টো সুর গাইতে শুরু করেছেন। দম্পতির বিরুদ্ধেই টাকা লোপাটের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ববিটের অভিযোগ, ওই টাকায় তাকে যা যা সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দম্পতি, তা আদৌ তারা করেননি। একটি ট্রাক, বাড়ি সবই তাকে কিনে দেয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে নিজেরাই বিএমডব্লিউ গাড়ি কিনেছেন। কিছুদিন আগে নতুন বিএমডব্লিউ নিয়ে তারা ছুটি কাটাতে ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা এবং লাস ভেগাসেও যান বলে অভিযোগ তার। আর তার জন্য নিজেদের বাড়ির গ্যারেজে থাকার ব্যবস্থা করেন ওই দম্পতি।
এখনও পর্যন্ত তার জন্য যা খরচ করা হয়েছে, হিসাব করে দেখেছেন, ৪ লক্ষ ২ হাজার ডলারের মধ্যে ৩ লক্ষ ডলারের কোনো হিসাব নেই। সেই ৩ লাখ ডলার দিয়েই বিএমডব্লিউ গাড়ি এবং অন্যান্য খরচ করা হয়েছে বলে ববিটের অভিযোগ।
Advertisement
তবে ওই দম্পতি ববিটের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তারা জানান, ববিট নেশাগ্রস্ত মানুষ। সব টাকা তার হাতে দিয়ে দিলে, অর্থের অপব্যয় হবে। তাই ববিটের হাতে সবটা দিতে চাইছেন না তারা।
এসআর/জেআইএম