দেশজুড়ে

ধর্ষিত স্কুলছাত্রীর সন্তানের বাবা কে হবেন চাচা, নাকি ভাতিজা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ধর্ষিত ছাত্রী কন্যা সন্তানের মা হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সন্তান প্রসব করে ওই ছাত্রী। বর্তমানে মা-মেয়ে দু’জনেই সুস্থ আছে। এর আগে শনিবার ভোরে প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর বেডে ভর্তি হয় সে।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে ওই স্কুলছাত্রী সদ্য প্রসব করা কন্যাকে নিয়ে শুয়ে আছে। জন্ম নেয়া ওই শিশুটির দেখভাল করছেন স্কুল ছাত্রীর মা ও বড় বোন। পাশেই নীরবে বসে আছেন ধর্ষিতার বাবা ও ভগ্নিপতি। তাদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ।

ধর্ষিতার বাবা বলেন, আমার মেয়ে এমনিতেই শিশু তার মধ্যে আরেকটি শিশুর মা হলো। এখন এ শিশুর দায়িত্ব নেবে কে? আর পিতৃ পরিচয় কি? আমি এই মেয়েকে নিয়ে এখন কি করবো। আমি মামলা করার পরও মূল আসামি আনছের আলী ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। তারা আমার মেয়েকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন। আমি কি এর কোনো বিচার পাবো না? নাকি আমি গরিব বলে বিচার পাওয়ার অধিকার নাই?

কালিহাতী থানা পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বলেন, স্কুলছাত্রীর বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি আমি শুনেছি। মামলাটি একটু জটিল। ইতোমধ্যে মামলার এক আসামি শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই স্কুলছাত্রী ও শরিফুলের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মামলার অপর আসামি আনছের আলীকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Advertisement

উল্লেখ্য, কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের আনছের আলীর বাসায় কাজ করতো ওই স্কুলছাত্রী। কাজের সুযোগে আনছের আলী ওই স্কুলছাত্রীকে নিয়মিত ধর্ষণ করতো। ধর্ষণ করার সময় ঘটনাটি দেখে ফেলে তারই ভাতিজা শরিফুল ইসলাম। শরিফুল তার বড় ভাই মুনসুর আলীর ছেলে। শরিফুল ইসলাম ঘটনাটি লোকজনের কাছে বলে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নিজেও মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। হত্যার ভয় দেখিয়ে ও কাউকে কিছু বলতে ওই মেয়েকে নিষেধ করে আনছের আলী ও শরিফুল। পরে সুযোগ বুঝে চাচা-ভাতিজা প্রায়ই তাকে ধর্ষণ করতো। ধর্ষণের ফলে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে চাচা আনছের আলী ও ভাতিজা শরিফুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

আরিফ উর রহমান টগর/এমএএস/জেআইএম