খেলাধুলা

বাংলাদেশে ক্রিকেটারদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলাম : হাথুরু

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রায় সাড়ে তিন বছরের অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে ১০ মাস আগে। দীর্ঘ ৮ মাস কোচ শূন্য থাকার পরে ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডসকে পেয়েছেন মাশরাফি-সাকিবরা। তবু এই ১০ মাস পরে এসেও হাথুরু আলোচনায় ঘুরে ফিরে চলে আসে বাংলাদেশ দলের নাম।

Advertisement

সম্প্রতি জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ‘ইএসপিএন ক্রিকিনফো’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারেও এসেছে বাংলাদেশ দলের কথা। বর্তমানে নিজ দেশ শ্রীলংকার জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের দায়িত্বে রয়েছেন হাথুরুসিংহে। উপমহাদেশের দল হওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা শ্রীলংকায় কাজে আসছে বলে জানান হাথুরু।

বাংলাদেশের কোচ হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে হাথুরুর। আগের সব অভিজ্ঞতা মিলিয়েই নিজের বর্তমান দায়িত্বটা সহজ হচ্ছে বলে মনে করেন ৪৯ বছর বয়সী এই শ্রীলংকান। তিনি বলেন, ‘সব কাজই নতুন অভিজ্ঞতা। যখন অস্ট্রেলিয়ায় গেলাম তখন নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে কাজ করার দারুণ সুযোগ পেলাম। সেবার অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে কাজ করারও সুযোগ পেয়েছিলাম। সিডনি থান্ডারের দায়িত্ব নেয়াটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জটা ছিল পুরোপুরি ভিন্নরকম। একেক দলের একেক রকম পরিবেশ থাকে, ড্রেসিংরুমের চিত্র একেকরকম থাকে। সে অনুযায়ী আপনার পরিকল্পনাও বদলে নিতে হয়।’

হাথুরু আরও যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেটীয় সংস্কৃতিটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ, এই জায়গায় তারা ছাড় দিতে নারাজ। অন্য দেশ থেকে এগিয়ে যেতে যেকোন কিছু করতে সদা প্রস্তুত তারা। তাড়াহুড়ো করে তারা কোন ভুলভাল সিদ্ধান্ত নেয় না। আর বাংলাদেশে বলা যায় আমি আমার নিজের মতো কাজ করার আত্মবিশ্বাসটা পেয়েছি। আমি যা বিশ্বাস করি, আমার যেটা প্রকৃতি সেটার বাস্তবায়ন করতে ক্রিকেট বোর্ডের পূর্ণ সমর্থন আমি পেয়েছি। এসব অতীত অভিজ্ঞতা অবশ্যই আমাকে সাহায্য করে।’

Advertisement

হাথুরুর বাংলাদেশ অধ্যায়ের সবচেয়ে বড় আলোচনা বা সমালোচনা ছিল যে তিনি একাই ক্রিকেট দলে সর্বেসর্বা ছিলেন। দলের কোচ থেকে শুরু করে নির্বাচক এমনকি ম্যানেজারের দায়িত্বেও দখলদারি করতেন তিনি। কিন্তু দায়িত্ব ছাড়ার দশ মাস পরে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে সরাসরি না করেন হাথুরু। উল্টো বলেন তার অধীনে পূর্ণ স্বাধীনতাই পেয়েছিলেন মাশরাফিরা।

হাথুরু বলেন, ‘আমার মনে হয় না এমন কিছু (একাই সব দায়িত্ব পালন করা) ছিল। কোচের পদ পাওয়ার সাথে সাথে আপনার কিছু দায়িত্বও চলে আসে। পরিস্থিতি আপনার পক্ষে থাকুক বা বিপক্ষে এসব দায়িত্ব অন্যের দিকে না ঠেলে আপনার নিজেরই পালন করতে হয়। একজন নেতা হিসেবে আপনার দলের পক্ষে আপনাকে দাঁড়াতে হবে। আমার মনে হয় না আমি ম্যানেজারের মতো কিছু করেছিলাম। আমি খেলোয়াড় ও ম্যানেজম্যান্টের অন্যদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলাম। তবে যারা নিজেদের কাজ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখে না আমিও তাদের জন্য খুব বেশি সময় ব্যয় করি না।’

তবে বাংলাদেশকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা যে এখন শ্রীলঙ্কায় দারুণ কাজে দিচ্ছে তা অকপ্টে স্বীকার করে নেন সাবেক এই লঙ্কান ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘আমারও তাই মনে হয়। তবে শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে থাকার অভিজ্ঞতা নয়, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের সাথে কাজ করার অতীত অভিজ্ঞতাও আমাকে সাহায্য করছে। আমি কখনো ম্যানেজার হতে চাই না। তবে আমার যেটা সঠিক মনে হয় সেটাই করি, তাতে লোকে যাই বলুক বা ভাবুক না কেন।’

এসএএস/পিআর

Advertisement