কৃষি ও প্রকৃতি

ঝিনুক চাষে সফলতার হাতছানি

প্রাচীনকাল থেকেই দেশের সব জায়গায় কম-বেশি মিঠাপানির ঝিনুক থেকে মুক্তা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। বঙ্গোপসাগর প্রাকৃতিক মুক্তার আবাসস্থল। বাংলাদেশের মহেশখালী ছিল ‘পিংক পার্ল’ বা গোলাপি মুক্তার জন্য জগদ্বিখ্যাত। এছাড়া চারদিকে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পুকুর-দীঘি, খাল-বিল, হাওর-বাওর। এসব জলাশয় মুক্তা বহনকারী ঝিনুকে পরিপূর্ণ। তবে গুণগত উৎকর্ষতা সম্পন্ন গোলাপি মুক্তা বৃহত্তর ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, রাজশাহী, বগুড়া, ফরিদপুর ও চট্টগ্রামে বেশি পাওয়া যায়।

Advertisement

দেশের পুকুর-দীঘি, খাল-বিল, হাওর-বাওর, নদী-নালা ও জলাশয়ে মাছের সঙ্গে ঝিনুক চাষ করে প্রতি একরে ৪০ লাখ টাকা অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত মুক্তা বিদেশে রফতানি করে প্রতি বছর ১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। একই সাথে এতে ২০-৩০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

> আরও পড়ুন- সুন্দরবনে বাড়ছে বাঘের সংখ্যা

গ্রামীণ যে কোন পরিবেশে ছোট-বড় পুকুরে মাছের সাথে অতিরিক্ত হিসেবে মুক্তা চাষ করা সম্ভব। একটি ঝিনুকে ১০-১২টি মুক্তা জন্মে। প্রতিটি মুক্তার খুচরামূল্য ৫০ টাকা। প্রতি শতাংশে ৬০-১০০টি ঝিনুক চাষ করা যায়। প্রতি শতাংশে ৮০টি ঝিনুকে গড়ে ১০টি করে ৮০০ মুক্তা পাওয়া যায়, যার বাজারমূল্য ৪০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে প্রতি একরে ৪০ লাখ টাকার মুক্তা উৎপাদন করা সম্ভব।

Advertisement

এছাড়াও মুক্তা উৎপাদনকারী ঝিনুকের মাংস মাছ ও চিংড়ির উপাদেয় খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। অনেক দেশে ঝিনুকের মাংস মানুষের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। একজন চাষি মুক্তা চাষ করে মুক্তার পাশাপাশি ঝিনুকের খোলস ও মাংসল অংশ বিক্রি করেও লাভবান হতে পারেন। আন্তর্জাতিক বাজারে মুক্তার চাহিদা যেমন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনিভাবে অভ্যন্তরীণ বাজারেও মুক্তার চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এসইউ/জেআইএম