দেশজুড়ে

মাছ চুরির অভিযোগে ৭ জেলেকে ন্যাড়া করে নির্যাতন

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মাছ চুরির অভিযোগ ৭ জেলেকে আটকে রেখে মাথার চুল কেটে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে জেলেদের কাছ থেকে জোরপূর্বক ধর্মবিরোধী বক্তব্যও আদায় করে তারা।

Advertisement

নির্যাতিত জেলেরা হলেন- চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার দলঘাট ইউনিয়নের জালিয়া পাড়া এলাকার জতিন্দ্র দাসের ছেলে লেদু মিয়া সর্দার, একই এলাকার মনাত সর্দারের ছেলে গোপাল সর্দার, তার ছেলে লিটন সর্দার, দিলিপ সর্দারের ছেলে জুমুর সর্দার, বাবুল সর্দারের ছেলে লিটন, মৃত বরদ্দারের ছেলে অরুণ সর্দার ও বোয়ালখালী উপজেলার গৌর নন্দী এলাকার হাসির ছেলে দুলাল।

উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বদি উদ্দিন পাড়া এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এসব জেলেদের এমন নির্যাতনে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। কিন্তু নির্যাতনের খবর ও ভিডিও প্রকাশ হলেও এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। তাই বাধ্য হয়ে নির্যাতন সয়ে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যায় অসহায় এসব জেলে।

Advertisement

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেকুয়ার পেচু মিয়া বাড়ীর পুকুরে মাছ ধরার জন্য চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে মজুরিভিত্তিক একদল জেলে আনেন মিয়া বাড়ির কারবারি ও রাজাখালী ইউনিয়নের বদিউদ্দীনপাড়ার নুরুল আবছার প্রকাশ বদু মেম্বার। মাছ ধরা শেষে জেলেরা তাদের জালসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম নিয়ে পটিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা করেন। কিন্তু তারা ইউনিয়নের মগনামা সীমান্ত ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বদু মেম্বারের নির্দেশে একদল ব্যক্তি তাদের আটক করে ফের বদিউদ্দিনপাড়ায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে মাছ চুরির অভিযোগ এনে আটকে রেখে একই এলাকার আতিক, আব্দুল কাদের, ওসমান গণিসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি নির্যাতন চালান। এ সময় তাদের মাথা ন্যাড়া করে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ঘুরানো হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় নির্যাতিত জেলেরা মুক্তি পায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ না পাওয়ায় আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য নুরুল আবছার বদু মেম্বারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সায়ীদ আলমগীর/আরএ/জেআইএম

Advertisement