মতামত

দেখার কেউ নেই?

মশার উৎপাতে জনজীবন অতিষ্ঠ। বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ থাকলেও সে অনুযায়ী মশক নিধনে নেই দুই সিটি কর্পোরেশেনের তেমন কোনো কার্যক্রম। তাই মশা নিয়ে দুর্ভোগ বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মশাবাহিত নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও। তাই মশক নিধনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

Advertisement

নগরবাসীরা বলছেন অন্য সময়ের চেয়ে মশার উপদ্রব খুব বেড়েছে। দিনেও মশার হাত থেকে রেহাই নেই। অন্যদিকে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই দরজা-জানালা সব বন্ধ করে বদ্ধভাবে থাকতে হয়। অথচ মশক নিধনে দুই সিটি কর্পোরেশেনের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়- মশা নিধনে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের কার্যকরী পদক্ষেপ প্রশ্নবিদ্ধ। প্রতিদিন সকাল-বিকেল দুবেলা মশা নিধনে বিষাক্ত কীটনাশক ছিটানোর কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। মশক নিধনকারী কর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না।মশা নিধন কার্যক্রমের জন্য দুই সিটি কর্পোরেশনে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু এর কতটা মশক নিধনে ব্যবহার হয় এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়। হলে মশার এত উপদ্রব থাকার কথা নয়।আশার কথা হচ্ছে, মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় এবার জনসাধারণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ডিএনসিসি একটি হটলাইন চালু করেছে। হটলাইন নম্বরটি হচ্ছে ০১৯৩২-৬৬৫৫৪৪। ডিএনসিসির আওতাধীন যে কোনো এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য এ সেবা চালু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই নম্বরে যে কেউ কল করতে পারবেন। এ নম্বরে ফোন দিলে মশক নিধনকর্মী পৌঁছে যাবে আপনার এলাকায়। ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই স্থানে মশার ওষুধ ছিটাবে। কার্যক্ষেত্রেও যেন এর প্রতিফলন দেখা যায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

মশা শুধু দুর্ভোগই সৃষ্টি করেনা। ডেঙ্গু, জিকা ভাইরাসহ বিভিন্ন মরণঘাতি রোগের জীবাণুও বহন করে মশা। এজন্য মশার উপদ্রব বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে এডিস মশার সংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না পায় এ লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। মানুষজনকে সচেতন করে তুলতে হবে। এ বিষয়ে নাগরিক সচেতনতাও গুরুত্বপূর্ণ। বাসাবাড়ির আঙিনা, ফুলের টব, ছাদের বাগান, ভবনের চৌবাচ্চা, এসি-ফ্রিজ থেকে জমা পানিতে মশার বংশ বিস্তার বেশি ঘটে। এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

মশক নিধন নিয়ে কোনো ধরনের অবহেলা বা শৈথিল্য মেনে নেওয়া যায় না। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নানা সময় মশক নিধনের নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হয় না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দেখার যেন কেউ নেই। অথচ দিন দিন রাজধানীতে মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে। মশক নিধনে তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। অথচ এ জন্য বাজেট রয়েছে। রয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক। কাজেই মশক নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চায় মানুষজন।

Advertisement

এইচআর/এমএস