খেলাধুলা

এশিয়াডের সাফল্যে সাফ নিয়ে নতুন আশা

নিরাশার ফুটবলে হঠাৎ করেই আশার বাতি জ্বলেছে। সে বাতি জ্বালিয়েছে এশিয়ান গেমসে স্মরণীয় সাফল্য। এশিয়ার সবচেয়ে বড় ও মর্যাদার ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো উঠেছিল শেষ ষোলোতে। তাও আবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে শক্তিশালী কাতারকে হারিয়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এশিয়ার আরেক পরাশক্তি উত্তর কোরিয়ার কাছে ৩-১ গোলে হারলেও বাংলাদেশের লড়াকু পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে। এশিয়াডের এ সাফল্য নতুন করে আশা জাগিয়েছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে।

Advertisement

এশিয়ান গেমস ফুটবলে বাংলাদেশ এমন একটা সময়ে সাফল্য পেয়েছে যখন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ কড়া নাড়ছে দরজায়। ইন্দোনেশিয়া থেকে ফুটবল দল দেশে ফেরার সপ্তাহ না ঘুরতেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। দুই টুর্নামেন্টের পার্থক্য একটাই-এশিয়ান গেমসে খেলেছে অনূর্ধ্ব-২৩ দল (৩ জন সিনিয়র খেলোয়াড়সহ) এবং সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় দল।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে বলা হয় দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ। সার্ক গোল্ডকাপ নামে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল টুর্নামেন্ট যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের লাহোর থেকে। চার দল নিয়ে হয়েছিল ওই টুর্নামেন্ট। বাংলাদেশ খেলেনি সার্ক গোল্ডকাপের প্রথম আসরে। দুই বছর পর একই নামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর বসে শ্রীলঙ্কার কলম্বোয়। বাংলাদেশ অংশ নিয়ে সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠে বিদায় নেয় ভারতের কাছে হেরে।

দুই আসর পর নাম বদলে সার্ক গোল্ডকাপ হয়ে যায় ‘সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)’ গোল্ডকাপ। নেপালে অনুষ্ঠিত ওই আসর বাংলাদেশ বিদায় নেয় গ্রুপ পর্ব থেকেই। ১৯৯৯ সালে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত আসরে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছিল প্রথমবারের মতো। হেরে যায় ভারতের কাছে। ২০০৩ সালে প্রথম স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের। ঢাকায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় ফাইনালে টাইব্রেকারে মালদ্বীপকে হারিয়ে।

Advertisement

তার পর থেকেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ পরিণত হতে থাকে আন্ডারডগে। ২০০৫ সালে পাকিস্তানের করাচিতে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠলেও পরের ৫ আসরে বাংলাদেশ চরমভাবে ব্যর্থ হয়। এর মধ্যে ২০০৯ সালে ঢাকায় সেমিফাইনালে পা রাখতে সক্ষম হয়, বাকি আসরগুলোর গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায়। এক সময়ের ফেভারিট বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে আস্তে আস্তে চলে যায় গণনার বাইরে।

সেই বাংলাদেশের ফুটবলে হঠাৎ করেই রঙ লেগেছে। এশিয়ান গেমসে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর ফুটবল নিয়ে নতুন আশা জেগেছে। ঘরের মাঠে এবার বাংলাদেশ শুধু ফেভারিটই নয়, হট ফেভারিট হয়েই টুর্নামেন্ট শুরু করবে-এমন প্রত্যাশা ফুটবলামোদীদের।

এশিয়ান গেমসে উজবেকিস্তানের কাছে ৩-০ গোলে হারের পর থাইল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে ১-০ গোলে কাতারকে হারিয়ে উঠে যায় শেষ ষোলোতে। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশ ১-৩ গোলে হেরে যায় উত্তর কোরিয়ার কাছে।

তৃতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ৪ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্ট হবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। গ্রুপিং ও ফিকশ্চার হয়েছে আগেই। সাফ থেকে আফগানিস্তান বের হয়ে যাওয়ায় এবারের টুর্নামেন্ট হচ্ছে ৭ জাতির। গত আসরেও ৭ দল ছিল পাকিস্তান ফিফার সাসপেনশনে থাকায়।

Advertisement

এবার বাংলাদেশ খেলবে ‘এ’ গ্রুপে ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তানের সঙ্গে। ‘বি’ গ্রুপের দল ভারত, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ উদ্বোধনী দিনে, প্রতিপক্ষ ভুটান।

আরআই/এমএমআর/জেআইএম