কোরবানির পশুর চামড়ার দাম গত বছরের তুলনায় কম নির্ধারণের পর লোকসানের কথা বলছেন ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, আড়তদাররা নির্ধারিত দামেও চামড়া কিনতে চাইছেন না।
Advertisement
এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া নির্ধারণ করেছে ৪৫-৫০ টাকা আর ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা। এ ছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকা।
গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৫০-৫৫ এবং ঢাকার বাইরে ৪০-৪৫ টাকায় সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া ২০-২২ এবং বকরির চামড়া ১৫-১৭ টাকায় সংগ্রহ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে জমে উঠেছে চামড়ার আড়তে বেচাকেনা। কোরবানির ঈদে সারাদেশে এক কোটি ২০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। চামড়ার দর নিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও পাইকারদের মধ্যে রয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
Advertisement
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন, পশুর চামড়া কিনে বিপদে পড়েছেন তারা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে কেনা কুরবানির চামড়া ন্যায্য মূল্যে আড়তে বিক্রি করতে পারছেন না। সরকার নির্ধারিত দামেও চামড়া কিনতে চাইছেন না আড়তদাররা।
তবে পাইকাররা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখেই কেনা হচ্ছে চামড়া।
গাবতলী মাজার রোডের বাসিন্দা ও আমিনবাজার এলাকার আড়তদার গাউসুল আজম বলেন, অতিরিক্ত দামে তো আমরাও বিক্রি করতে পারবো না। তাহলে আমরা কেন বেশি দামে চামড়া কিনবো? আর আমরা ট্যানারি মালিকদের কাছে লোকসানে চামড়া বিক্রি করতে চাই না।
মিরপুর এলাকা থেকে প্রায় দেড় হাজার চামড়া কিনে আমিনবাজার যাওয়ার পথে কথা হয় ফড়িয়া ব্যবসায়ী সোবহান মোল্লার সঙ্গে।
Advertisement
তিনি বলেন, বেশ কিছু চামড়া আটশ থেকে এক হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। কিন্তু পাইকার আড়তদাররা সাতশ টাকার বেশি দাম দিতেই চাইছেন না। এ সব চামড়া নিয়ে বিপাকে আছি।
ফড়িয়া ব্যবসায়ী ইব্রাহিম খান বলেন, মগবাজার থেকে হাজারখানেক গরুর চামড়া কিনছি। দেড়শ ছাগলের চামড়াও আছে। পোস্তগোলার আড়তে নিয়ে যাওয়ার পর দামে মিলছে না। সরকার নির্ধারিত দামেও যদি চামড়া বিক্রি করতে পারতাম তাহলেও লাভ হত। সেখানে গরুর চামড়া বিক্রিতেই হিমশিম খাচ্ছিম, ছাগলের চামড়া এক রকম ফ্রি দিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার বাজার ভালো না। যে কারণে দেশেও দাম কমেছে।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে চামড়ার দাম র্নিধারণ করি। চামড়ার গ্রেডিংয়ের ওপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গ্রেডিং না বুঝেই শুধু সাইজ দেখে চামড়া কেনেন। এতে তাদের কেনা দামে হেরফের হয়।
জেইউ/এএইচ/পিআর