বুধবার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। সে হিসেবে ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস আজ (সোমবার)। সড়ক-রেল-নৌ যে যেভাবে পারছেন সে পথেই রওয়ানা দিচ্ছেন গন্তব্যে।
Advertisement
সোমবার সকালে থেকে সদরঘাটের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যাত্রী হয়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো। উপচে পড়া ভিড়ের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি আর অভিযোগেরও যেন শেষ নেই।
গত ১০ আগস্ট থেকে ঈদের বিশেষ লঞ্চ চালু হয়েছে। এবার সরকারি ছয়টি স্টিমার আর ১৫০-এর বেশি বেসরকারি লঞ্চ ঈদের যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন যানবাহনের নদী পারপারে ৫১টি ফেরি নিয়োজিত রয়েছে বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে।
সোমবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঈদে ঘরমুখী যাত্রীরা পরিবার নিয়ে লঞ্চ টার্মিনালে আসতে শুরু করেন। সকাল ৭টায় মিরপুর থেকে সদরঘাটে লঞ্চ টার্মিনালে এসে পৌঁছান বেসরকারি চাকরিজীবী নিজামউদ্দিন। তিনি জানান, ঈদযাত্রায় কষ্ট হবে সেটা মেনে নিয়েই তিনি যাত্রা শুরু করেছেন।
Advertisement
নিজামউদ্দিনের মতোই সকাল ৭টায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এসে পৌঁছান কল্পনা বেগম ও তার দুই মেয়ে। কল্পনা বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মেয়েদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা ছিল বলে আগে যেতে পারিনি। মাদারীপুরে শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছি। কিন্তু এখনও টিকিট পাইনি। এ জন্য আমার স্বামী টিকিট করার চেষ্টা করছেন।
সকাল সকাল এসে লঞ্চের ডেকে চাদর বিছিয়ে পরিবার নিয়ে বসে পড়েছিলেন পোশাক কর্মী হালিম মিয়া। বরিশালে নিজের বাড়ি যাচ্ছেন তিনি ঈদ করতে। সঙ্গে রয়েছে ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে। হালিম মিয়া বলেন, গত ঈদে সন্তানদের নিয়ে ওদের দাদার বাড়িতে যেতে পারিনি। তাই এবার আগে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ছুটি পেতে দেরি হওয়ায় আজ যাচ্ছি।
বসার একটা ব্যবস্থা করে ফেলতে পারলেও তার জন্য বাড়তি পয়সা খরচ করতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন হালিম মিয়া।
লঞ্চের ডেকে বসা একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন, এমনিতে লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী তোলা হচ্ছে। তারপরও মাঝপথে থামিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে। এ কারণে অনেককে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যেতে হচ্ছে। তার ওপরে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তার।
Advertisement
এবার ঈদযাত্রায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের সার্বিক প্রস্তুতি ভালো। ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ যাতায়াত করছে বলে জানিয়েছেন সদরঘাটে পরিদর্শনে আসা নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গত ১০ আগস্ট থেকে শুরু করে অধিকাংশ মানুষ বাড়ি পৌঁছে গেছে, বর্তমানে পোশাককর্মীদের বাড়ি ফেরার বাড়তি চাপ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যাত্রী নিরাপত্তা ও হয়রানি বন্ধে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই হয়ে যাতে কোনো লঞ্চ ঘাট থেকে ছেড়ে যেতে না পারে সেদিকে কঠোর নজর রাখা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যাত্রীদেরও অসচেতনতা, বিশেষ করে ডেকের যাত্রীরা কোনো কিছুই না মেনে যার যার পছন্দের লঞ্চে দল বেঁধে উঠতে থাকে। বাধা দিতে গেলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সকলের সমন্বয়ে এবার ঈদে সুষ্ঠুভাবে লঞ্চ পারাপার করার চেষ্টাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
এমএইচএম/এনএফ/জেআইএম