পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এরইমধ্যে রাজশাহীতে ঈদ উদযাপনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঈদে নগরীর নিরাপত্তায় নেয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা।
Advertisement
ঈদ উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা, নগরীজুড়ে ব্যানার ও পতাকা দিয়ে সজ্জিত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের রাজশাহী বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক একেএম মনিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঈদুল আজহার এ জামাতে বরাবরেরমতো ইমামতি করবেন হযরত শাহ্ মখদুম (রহ.) জামিয়া ইসলামীয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতি শাহাদাৎ আলী।
প্রধান ঈদ জামায়াত আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের দফতরে বিশেষ সভা হয়েছে। সেখানে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
Advertisement
এর বাইরে অন্যান্য ঈদগাহে নির্ধারিত সময়ে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এসব ঈদ জামাতে দেশ ও জাতির অগ্রগতি ও কল্যাণ এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সংহতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হবে।
নামাজ আদায় শেষে সিটি করপোরেশন নির্ধারিত নগরীর ২১০ পয়েন্টে পশু কোরবানি দেবেন মুসল্লিরা। ওই রাতের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় কোরবানি পশুর বর্জ্য সরিয়ে নেবে রাসিক।
এদিকে ঈদ উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে শিশু-কিশোরদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাতে সরকারি, বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জা এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা, শিশুকেন্দ্র, শিশু পরিবার, শিশু পল্লী, সরকারি শিশু সদন, ছোটমনি নিবাস, সেফ হোম এবং এরকম প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
এছাড়া রাজশাহী গণযোগাযোগ অধিদফতর মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ চলচ্চিত্রও প্রদর্শন করা হবে।
Advertisement
অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে নগরজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজশাহী নগর পুলিশ (আরএমপি)। নগরীর প্রধান ঈদ জামাত ছাড়াও বড় ঈদ জামাতগুলো ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। অন্য ঈদগাহেও থাকবে নিরাপত্তা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থায় থাকবে আইন-শৃংখলা বাহিনী।
ঈদের ছুটিতে বাসা-বাড়ি ও বিপণী বিতানের নিরাপত্তায় কিছু পরামর্শও দেয়া হয়েছে আরএমপির পক্ষ থেকে। এরই মধ্যে আরএমপির প্রতিটি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে থানা, টহল ও গোয়েন্দা পুলিশ। প্রতিটি জোনের এসিরা এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করবেন।
ছুটিতে নগরীর প্রত্যেক এলাকায় সংশ্লিষ্ট বিট পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ পালা করে টহল দেবে। তাদের সহযোগিতা করবে টহল ও সাদা পোশাকের পুলিশ।
বাসা-বড়ির পাশাপাশি বিভিন্ন বিপণীবিতানেও এবার থাকবে পুলিশের কড়া নজর। এক্ষেত্রে বিপণী বিতানগুলোর নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সমন্বয় করে সেসব জায়গায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে রাতের বেলা বাড়ানো হবে পুলিশের টহল। ছুটি শেষে রাজধানীমুখি মানুষের নিরাপত্তায় বিভিন্ন বাস ও রেল স্টেশনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে। নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিভিন্ন পয়েন্ট নীবিড় নজরদারির আওতায় আনা হবে। বিনোদন কেন্দ্র ঘিরেও থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা।
ইফতেখায়ের আলম আরো বলেন, বরাবরের মতো নগরীতে বিস্ফোরকসহ আতশবাজি বহন ও ফাটানোর ওপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। নগরীর আইন-শৃংখলা রক্ষায় ঈদের আগের দিন থেকে পরদিন পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
গত ১৮ আগস্ট এ নিয়ে এক আদেশ জারি করেছে আরএমপি। শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় নগরবাসীর সহায়তা চান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/জেআইএম