ফোন রিসিভ করেই কাজী মো. সালাউদ্দিন বললেন ‘ধন্যবাদ।’ চারিদিক থেকে ফোন আসছে, সবারই উদ্দেশ্য কাতারকে হারিয়ে এশিয়ান গেমস ফুটবলে বাংলাদেশের শেষ ষোলোতে ওঠায় বাফুফে সভাপাতিকে অভিনন্দন জানানো। যে কারণে, ‘অভিনন্দন’- শব্দটি উচ্চারণের আগেই বুঝে ফেলেছিলেন দেশের ফুটবলের অভিভাবক এবং কিংবদন্তী ফুটবলার।
Advertisement
আনন্দেঠাসা ভারী কন্ঠ। চারিদিক থেকে ফোনের এতটাই চাপ যে বাফুফে সভাপতির এখনো কথা বলা হয়নি জাকার্তায় ফুটবলারদের সঙ্গে, ‘আমি এখনো কারো সঙ্গে কথা বলতে পারিনি।’ ব্যস্ততা বুঝে শুধু জানতে চাইলাম- কেমন লাগছে আপনার। ‘আমি হ্যাপি, এখন পর্যন্ত এটাই আমাদের ফুটবলের সেরা সাফল্য’-ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কাজী মো. সালাউদ্দিন।
এশিয়ান গেমস ফুটবলের এবারের আসরে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়। তবে এশিয়ান গেমসে কিন্ত প্রথম নয়। এর আগে ১৯৮২ সালে দিল্লী এশিয়ান গেমসে মালয়েশিয়াকে ২-১ গোলে, ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়ান গেমসে নেপালকে ১-০ গোলে এবং ২০১৪ সালে ইনচিয়ন এশিয়ান গেমসে আফগানিস্তানকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ; কিন্তু রোববার ইন্দোনেশিয়ায় ১-০ গোলে কাতারকে হারানোর সঙ্গে অন্য কোনো জয়ের তো তুলনাই হয় না।
এই জয় বাংলাদেশেল নাম লিপিবদ্ধ করেছে এশিয়ার সেরা ১৬ দলের তালিকায়। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৯৬ ধাপ এগিয়ে কাতার। আগামী ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজন করবে তারা। বিশ্বকাপে খেলবেও তারা। এই অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ফুটবলাদের অনেকেই হয়তো থাকবেন আগামী বিশ্বকাপের দলে। এমন একটি দলকে হারিয়ে ফুটবলে নতুন ইতিহাস লিখলো লাল-সবুজের দেশ।
Advertisement
ঈদুল আজহার প্রস্তুতি চলছে চারিদিকে। ঈদের ঠিক তিন দিন আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশে অসাধারণ এক সাফল্যের খবর পাঠালেন ফুটবলাররা। যা ঈদ আনন্দের সঙ্গে বাড়তি যোগ। দেশবাসির জন্য অন্যরকম ‘ঈদ উপহার’ দিলেন জামাল ভুঁইয়ারা।
শেষ ষোলোতে আরও কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে বাংলাদেশকে। ২৪ আগস্ট কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ সৌদি আরব কিংবা ইরান। ‘এফ’ গ্রুপের বাকি ম্যাচ শেষ হলেই জানা যাবে প্রতিপক্ষ।
আগের সন্ধ্যায় মেয়েরা ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে সাফল্যের একটা বৃত্ত পূরণ হতো বাংলাদেশের। তবে আগের দিনের কষ্ট এখন আর মনে রাখবে না কোনো ফুটবলামোদীই। এশিয়ান গেমসে বিজয়ের কেতন উড়িয়েছেন ফুটবলের সব সাফল্য পেছনে ফেলে দিয়েছেন জামাল-সুফিলরা।
আরআই/আইএইচএস/পিআর
Advertisement