প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে ঋণ দিচ্ছে সরকারি চার ব্যাংক। চামড়া খাতে দেয়া ঋণ সহজে আদায় না হলেও শিল্পের স্বার্থে ৬০০ কোটি টাকার ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো।
Advertisement
স্বল্পমেয়াদি এ ঋণ বিতরণ করবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংক।
ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চামড়া শিল্পের স্বার্থে কাঁচা চামড়া সংগ্রহে ঋণ দিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। প্রতি বছর কোরবানি ঈদের আগে এ ঋণ দেয়া হয়। এবার ৪২ প্রতিষ্ঠানকে মোট ৬০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী আগের বছরের ঋণ যারা পুরোপুরি পরিশোধ করেছে তারাই ঋণ পায়। তবে গ্রহক সম্পর্কের বিবেচনায় ব্যাংক অনেকেই ঋণ দিয়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে চামড়া কিনতে সবচেয়ে বেশি ঋণ দিচ্ছে জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটি এবার ৩২ প্রতিষ্ঠানকে দেবে ২১০ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটি দিয়েছিল ২০১ কোটি টাকা।
Advertisement
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ দিচ্ছে রূপালী ব্যাংক। এ বছর ব্যাংকটি দেবে ১৭৫ কোটি টাকা।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান বলেন, গত বছর চারটি প্রতিষ্ঠানকে চামড়া কিনতে ১৩৫ কোটি টাকা দেয়া হয়। এবার তিন প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হবে ১৭৫ কোটি টাকা। আগে ঋণ পেয়েছিল এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান পুনঃতফসিল সুবিধা নিয়েছে বলে জানান তিনি।
সোনালী ব্যাংক এ বছর ৭০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। ভুলুয়া ট্যানারি, আমিন ট্যানারি ও কালাম ট্যানারিকে এ ঋণ দেয়া হবে বলে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান।
চার প্রতিষ্ঠানকে ১৪৬ কোটি টাকা দেবে অগ্রণী ব্যাংক। গত বছর দুই প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছিল ১২০ কোটি টাকা।
Advertisement
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নির্দেশনা মোতাবেক কম সুদেই এসব ঋণ দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সালমা ট্যানারির মালিক সাখাওয়াত উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, চামড়া কেনার ঋণ মূলত এক বছরের জন্য পাওয়া যায়। যারা গত বছরের টাকা পরিশোধ করেছে তারাই ঋণ পায়। এ বছর সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরের কারণে চামড়া শিল্পে অর্থের সংকট চলছে। দুই তিনজন ব্যবসায়ী ছাড়া কেউ ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। তাই নতুন করে অনেকেই ব্যাংক ঋণ পাবে না। ব্যাংকের ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত কাগজে কলমেই থেকে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী চামড়া কেনায় ব্যাংকগুলো মোট এক হাজার ১৩৭ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ১৮টি ব্যাংক ৭১ গ্রাহকের কাছে এ ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে অনিয়মিত ঋণের পরিমাণ ৮৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
এসআই/এএইচ/জেআইএম