জাতীয়

পশুর মজুত পর্যাপ্ত, সঙ্কটের আশঙ্কা নেই: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

কোরবানির জন্য দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পশু মজুদ রয়েছে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, ‘পশু নিয়ে সঙ্কটের কোনো আশঙ্কা নেই। শেষ মুহূর্তে কিছু পশু উদ্বৃত্ত থেকে যাবে।’

Advertisement

রোববার জাগো নিউজকে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

আগামী ২২ আগস্ট ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত এ উৎসবে মুসলমানরা তাদের প্রিয় বস্তু মহান আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে তার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন।

প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘এই ঈদের মূল বিষয়টিই হচ্ছে কোরবানি করা। মানুষের আর্থিক সামর্থ্য বেড়েছে, তাই শরিয়াহ অনুযায়ী কোরবানি দেয়া মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। সেই হিসেবে যে পরিমাণ পশু অর্থাৎ গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ দরকার হবে সেগুলো আমাদের এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে।’

Advertisement

‘এবার দেশি গরুতেই কোরবানির ঈদ সম্পন্ন হবে বলে আমরা মনে করছি। আমাদের পশুর স্টক (মজুদ) যথেষ্ট রয়েছে। কোনো ঘাটতি নেই।’

গত বছর এক কোটি ৪ লাখ লাখের মতো পশু কোরবানি হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এবার অনেক লোকের আর্থিক সংগতি বেড়েছে, এ ছাড়া সামনে নির্বাচন। নির্বাচনের প্রার্থীরা অনেক সময় একটির স্থানে দুটি পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। তাই সব মিলিয়ে আমরা মনে করছি- এবার পশুর চাহিদা এক কোটি ১৫ লাখ হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের হিসাব অনুযায়ী পশুর মজুদ রয়েছে এক কোটি ১৬ লাখের মতো। এ ছাড়া গৃহস্থালী পর্যায়ে অনেকের একটি-দুটি করে গরু রয়েছে। সেগুলোসহ কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা এক কোটি ২৫ লাখের কম নয়। সেখানে এক কোটি ১৫ লাখ চাহিদা হলে পশু উদ্বৃত্ত থেকে যাবে।’

প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এবার কোরবানির পশু নিয়ে সঙ্কটের কোনো আশঙ্কা নেই। আমি গতকাল এলাকা থেকে এলাম। আমাদের ওখানে (খুলনায়) বড় বড় দুটি পার্মানেন্ট (স্থায়ী) হাট আছে। বৃহস্পতিবার সেই হাট বসে। গত বৃহস্পতিবার সেই হাট হয়ে গেছে। এবার ওই হাটে বিপুল সংখ্যক গরু এসেছে, একটি গরুও ভারতের নয়। বিক্রি হওয়ার পরও অনেক গরু রয়ে গেছে। আমরা আশা করি শেষ মুহূর্তে কোনো ক্রাইসিস (সঙ্কট) হবে না। কিছু গরু উদ্বৃত্তই থাকবে।’

Advertisement

বাজারে ভারত-মিয়ানমারের গরু দেখা যাচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে পাশের দেশ থেকে কিছু গরু আসতে পারে। তবে তা অনেক কম, হিসাবের মধ্যে পড়ে না। অন্য দেশ থেকে গরু আনতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। এ ছাড়া মানুষের ঝোঁকও কিন্তু দেশি গরুর প্রতি।’

ক্রেতারা বলছেন এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পশুর দামের বিষয়ে ক্রেতারা বলছেন একটু বেশি, খামারিরা বলছেন একটু কম। এখন পর্যন্ত যে রিপোর্ট আমাদের কাছে আছে, তাতে দাম উভয় পক্ষের জন্যই সহনীয়।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘পশু উৎপাদনের আমাদের যে ধারা শুরু হয়েছে, আমরা চাচ্ছি সেটা সাসটেইনেবল (টেকসই) হোক। আমাদের খামার ব্যবস্থা ও গরু-মহিষ পালনের দিকটা অনেক বেশি উন্নত হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারও খামারিদের বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করেছে। অনেক শিক্ষিত বেকাররা এখন সুন্দর সুন্দর খামার তৈরি করেছে। আমাদের দেশে এখন কয়েক লাখ খামার হয়েছে। সেখানে অত্যন্ত যত্নসহকারে স্বাস্থ্যকরভাবে গবাদিপশু লালন-পালন করা হচ্ছে। এবার হাটগুলোতে প্রচুর গরু এবং সব গরুরই চেহারা সুন্দর।’

আরএমএম/এনএফ/এমএস