হজ হিজরি বছরের জিলহজ মাসের ৮ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ দিনগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়। হজ উপলক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিশু, কিশোর, যবুক, বৃদ্ধ লাখো মুসলিম নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে। লাখো মানুষের পূণ্যের এ মহাসম্মিলনে অনেক মানুষ মৃত্যু বরণ করে। এ মৃত্যু নিয়ে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন সুসংবাদ।
Advertisement
কেননা হজ ও ওমরার পালনে পবিত্র নগরী মক্কায় আগমন আল্লাহ তাআলার নির্দেশ। ধর্মপ্রাণ মুসলমান যখন পবিত্র নগরী মক্কা কিংবা মদিনায় অবস্থান করেন, তখন তারা হয়ে যান আল্লাহর মেহমান। আল্লাহর মেহমান থাকা অবস্থায় কারো মৃত্যু হলে নিশ্চিত সে মৃত্যু কল্যাণের।
পবিত্র নগরী মক্কা কিংবা মদিনায় মৃত্যুবরণ সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুসংবাদ দিয়ে ঘোষণা করেন-
- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। অতঃপর সে মারা গেছে, তার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত হজের নেকি লেখা হতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি ওমরার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে; অতঃপর সে মারা গেছে, তার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত ওমরার নেকিও লেখা হতে থাকবে।’ (তারগিব ওয়াত তারহিব)
Advertisement
- হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমরা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে এক সফরে ছিলাম।
সে সময় ইহরাম অবস্থায় এক ব্যক্তি হঠাৎ উটের পিঠ থেকে পড়ে গিয়ে ঘাড় ভেঙে মারা যায়।
ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা সিদ্ধ পানিতে কুল গাছের পাতা দিয়ে তাকে গোসল দাও এবং তাঁর ইহরামের কাপড় দু’টি দিয়ে কাফন দাও।
তবে তার শরীরে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মাথা ঢাকবে না। কেননা কিয়ামতের দিন তাকে (ইহরামকারী মৃতব্যক্তিকে) তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় ওঠাবেন। (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
Advertisement
আরও পড়ুন > হজযাত্রী মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধশত ছাড়ালো
হজের সফরে মৃত ব্যক্তির জন্য দুঃখ নয়; বরং এ মহা খোশখবরি। কারণ হজের সফরের মৃত ব্যক্তিকে ইহরামের পোশাকেই দাফন করা হবে। আর কেয়ামতের দিন ইহরামের পোশাকেই তালবিয়া পাঠ করতে করতে সে হাজির হবে।
উল্লেখ্য যে-প্রতি বছরই হজের সময় সৌদি আরবের মক্কা বা মদিনায় অবস্থানকালে অনেক হজযাত্রী মারা যায়। নিয়ম অনুযায়ী হজ করতে যাওয়া কোনো হজযাত্রী মারা গেলে তার লাশ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় না। আর এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্রে হজের প্রস্ততিকালেই প্রত্যেক হাজিকে সম্মতি দিতে হয়।
হজের সফরে মক্কায় যারা মারা যায় তাদেরকে কাবা শরিফের সন্নিকটে জান্নাতুল মাওলাতে দাফন করা হয়। আর যারা মদিনায় মারা যায় তাদেরকে মসজিদে নববি সংলগ্ন জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়।
এ কবরস্থানে প্রিয়নবির সন্তান, স্ত্রীসহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরামের দাফন রয়েছে। হজ পালনকারীদের কেউ মারা গেলে তাদের দাফন এসব গোরস্থানে হওয়াও সৌভাগ্যের। আর হাদিসের খোশখবরীতো রয়েছে।
এ বছর পবিত্র হজ শুরুর আগেই ৫ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যুবরণ করেছে। আর হজের সফরে এখন পর্যন্ত সর্বমোট মৃত্যু বরণ করেছে ৫১জন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সে সব হজ পালনকারীকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন, যারা হজের সফরে মৃত্যু বরণ করেছেন। আমিন।
এমএমএস/এমএস