জাতীয়

যান্ত্রিক শহর ছেড়ে ঘরে ফিরছে মানুষ

কলকারখানা আর যানবাহনের বিকট শব্দ, কালো ধোঁয়া ও যানজটের যান্ত্রিক নগর ছেড়ে নাড়ীর টানে ঘরে ফিরছেন মানুষ। এখন সব স্রোত যেন রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ ঘাটে। রোববার গাবতলী ও কল্যাণপুরের বাস কাউন্টারগুলোতে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। উদ্দেশ্যেই একটাই বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানসহ প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দে অংশ নেয়া। কেউ যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি, আবার কেউবা ঘুরতে।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা গেছে, কল্যাণপুরের এসআর, নাবিল, দেশ, ন্যাশনাল, গ্রামীন, শ্যামলী, হানিফ, আগমনী পরিবহনসহ সব বাস কাউন্টারগুলোর ভেতরে ও বাইরে ঈদযাত্রীদের ভিড়। কেউ বাসে উঠছেন, কেউবা অপেক্ষায় বসে রয়েছেন।

গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগের সেই চিরচেনা রূপ। সকাল থেকে যাত্রীদের আনাগোনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার অধিকাংশ ঈদযাত্রার বাস ছাড়ছে গাবতলী থেকে। তবে শ্যামলী, কল্যাণপুর ও আসাদগেটের কাউন্টারগুলো থেকে মিনিবাসে করে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গাবতলী কাউন্টারে। যে কারণে গাবতলীর কাউন্টারগুলোর চেয়ে ভিড় বেশি কল্যাণপুর ও শ্যামলীতে।

Advertisement

রোববার সকালে গাবতলী ও কল্যাণপুরে কথা হয় বিভিন্ন পরিবহনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তারা বলছেন, তুলনামূলকভাবে এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক। এখন পর্যন্ত মহাসড়কে তেমন যানজট না থাকায় বাসগুলো যথাসময়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে।

কল্যাণপুরে শ্যামলী পরিবহন কাউন্টারের সামনে কথা হয় গাইবান্ধার সজিবের সঙ্গে। মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের এ শিক্ষার্থী বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় বাস। রাস্তায় যানজটে পড়ে যেন বিলম্ব না হয় সেজন্য আধা ঘণ্টা আগেই কাউন্টারে আসা। কতদিন বাড়ি যাওয়া হয় না। ঈদ উপলক্ষে বাড়িতে বোনরা আসবে। বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেবো। ভাবতেই ভাল লাগছে।

শম্পা নামের এক যাত্রী জানান, বিসিএসের প্রস্তুতির জন্য রংপুর থেকে ঢাকায় এছসেন তিনি। পড়াশোনা বেশ চলছিল। কিন্তু ঈদ কাছে আসায় পড়ায় আর মন বসছে না কিছুতেই। মনে হচ্ছে, বাড়ি যেতে পারলেই বাঁচি। তাই শেষ মুহূর্তে টিকিট কাটা। বন্ধুরা মিলে বাড়ি যাচ্ছি। এখন শুধু অপেক্ষা। একটু পরেই ছাড়বে বাস।

আগমনী বাস কাউন্টারে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে ছিলেন মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, বেসরকারি অফিসে চাকরি করি। সব ঈদে ছুটি পাই না। এবার আগেভাগে ছুটি নিলাম। পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুর যাচ্ছি। কোরবানির পশু কিনতে হবে। তাছাড়াও আরও অনেক ব্যস্ততা আছে। ছেলে-মেয়ে দুজনই মহাখুশি ঈদ উপলক্ষে অনেকদিন পর দাদু বাড়ি যাচ্ছে ওরা।

Advertisement

গ্রীন লাইন পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টার থেকে গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে সব বাস। সেখানে কথা হয় সিলেটের যাত্রী আসিফের সঙ্গে। তিনি বলেন, বন্ধুরা মিলে এবার সিলেটে যাচ্ছি এক বন্ধুর চা বাগানে ঘুরতে। ঈদের দুদিন পর সবাই ফের গ্রামের বাড়ি যাব।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের কল্যাণপুর কাউন্টারের সহকারী ম্যানেজার সফিকুল ইসলাম বাবু জানান, এবার সময় মতোই সব বাস ছেড়ে যাচ্ছে, এখন পর্যন্ত কোনো সিডিউল বিপর্যয় হয়নি। টাঙ্গাইলে গিয়ে বাসের গতি কমে গেলেও যানজট নেই। আশা করছি, আজও স্বস্তিতে ঘরে ফিরবেন যাত্রীরা।

অন্যদিকে আগমনী পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা আল আমিন জানান, অন্যান্য বার তো যাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলা পর্যন্ত হয়। পরের বাস আগে আসা। আগের বাস পরে যাওয়া। যানজটের কারণে সেই সিডিউল বিপর্যয় নেই। যাত্রীরাও সময় মতো যেতে পারছে।

জেইউ/এমবিআর/এমএস