আন্তর্জাতিক

বৈশ্বিক উষ্ণতা : সবুজ পৃথিবী রূপ নিচ্ছে মরুভূমির

তাপমাত্রার ক্রমশ ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে বিশ্বজুড়ে। দেখা দিচ্ছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন, সেই সঙ্গে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির এ প্রভাব আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে খরার প্রভাব সম্পর্কে বলতে গিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেন, ‘আমরা একটি মরুভূমির দেশে পরিণত হয়েছি।’ অস্ট্রেলিয়া সরকার সম্প্রতি দেশটির ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে খরার প্রভাব মোকাবেলায় কৃষকদের কয়েক মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা দেয়।

২০১৫ সাল থেকে মারাত্মক অনাবৃষ্টিজনিত খরায় ভুগছে ইথিওপিয়া। ব্যাহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন। প্রায় ৮৫ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, খরার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে দেশটির শত বছরের পুরনো যাযাবর সম্প্রদায়ের জীবনযাপনও।

আরও পড়ুন : জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান আর নেই

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কেপ টাউনের পানির স্তর নিচের দিকে নেমে যাওয়ায় শহরটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় পানি সরবরাহ বন্ধ থাকে শহরটি। সেই সময়কে বলা হয় ‘ডে-জিরো।’ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে পুরো দেশজুড়েই ‘ডে-জিরো’র মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউরোপের জনজীবন। কর্মজীবন, জনস্বাস্থ্য, ফসল উৎপাদনসহ নানা ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতার। অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার ভয়ে আছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

একদিকে অনাবৃষ্টি, অন্যদিকে অতিবৃষ্টি, এ দুয়ের মাশুল দিচ্ছে গ্রিসের জনগণ। দেশটির কিছু অঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে দেখা দিচ্ছে বন্যা, ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। অন্যদিকে অনাবৃষ্টির কারণেও ভুগতে হচ্ছে কৃষকদের।

আরও পড়ুন : শপথ নিয়েই মোদির পথে ইমরান খান

Advertisement

তিন মাসের বেশি বৃষ্টিপাতহীন থাকে না সুইডেনের কোনো অঞ্চল। ১৯৪৪ সালের পর থেকে এই আবহাওয়ায় অভ্যস্ত দেশটির জনগণ। কিন্তু এবার দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি হয়নি দেশটির কোনো অঞ্চলেই। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসল উৎপাদন।

চলতি বছরে গ্রীষ্মকালীন খরার কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটির জাতীয় কৃষক ইউনিয়ন এ অবস্থাটিকে ‘শুষ্ক খড়কুটার বাক্সে’র সাথেই তুলনা করেছেন।

তীব্র খরার কারণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলেও দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। খাবার পানি সংকটের হুমকিতে পড়া বিশ্বের কয়েকটি দেশের শহরের সাথে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে ভারতের অন্যতম শহর বেঙ্গালুরুর নাম। তবে দেশটির কেরালা প্রদেশে অতি বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ডি ডব্লিউ।

এসআইএস/জেআইএম