জাতীয়

আরও রোড সুইপার যোগ হচ্ছে ডিএনসিসিতে

রাজপথে ময়লা-আবর্জনা ও ধুলাবালির কমতি নেই রাজধানী ঢাকায়। এছাড়া দুই সিটি কর্পোরেশনেই রয়েছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সঙ্কট। ফলে এসব ময়লা-আবর্জনা থেকে কখনই মুক্তি পান না নগরবাসী। পরিচ্ছন্ন নগর গড়ে তোলার পরিকল্পনা থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিছন্নতার বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন আরও কয়েকটি রোড সুইপার গাড়ি।

Advertisement

যন্ত্রটি চালু করলে মুহূর্তের মধ্যেই রাস্তার ধুলাবালি, বর্জ্য পাইপ দিয়ে শুষে নেয়। ঢাকায় প্রতিদিন যে পরিমাণ আবর্জনা তৈরি হয় তাতে এগুলো অপসারণের জন্য প্রথাগত পদ্ধতি এখন আর যথেষ্ট নয়। সাধারণ উপায়ে ঝাড়ু দিয়ে বর্জ্য এক জায়গায় জমা করার পর সেখান থেকে আবার অপসারণের সময় কিছু ময়লা থেকেই যায়।

জানা গেছে, ঢাকার সড়কে ময়লায় ৯৭ শতাংশই বালু। সড়কে জলাবদ্ধতার যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ড্রেনগুলো ভরাট হওয়া। আর এর জন্য দায়ী বালু জমে যাওয়া। ডিএনসিসিতে বর্তমানে যতোজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছেন তাদের মাধ্যমে ঝাড়ু দিয়ে এই বালু ঠিকভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়।

গত কয়েক মাস ধরে এই যন্ত্রটি দিয়ে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে ব্যাপক সুফল পাওয়ায় ফের আরও ৫/৬টি বা বাজেটে কুলালে আরও বেশি এই রোড সুইপার গাড়ি কিনতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।

Advertisement

এর আগে প্রাথমিকভাবে বিজয় সরণি, মানিক মিয়া এভিনিউ, গণভবন, খেজুরবাগান, ক্রিসেন্ট লেক, ইন্দিরা রোড, সংসদ ভবনের আশপাশে পরিচ্ছন্নতার কাজে শুধুমাত্র একটি রোড সুইপার গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছিল।

রোড সুইপার দেখতে অনেকটা কাভার্ডভ্যানের মতো। যন্ত্রটির সামনের দিকে রয়েছে দুটি শোষণ পাইপ, যা ময়লা-আবর্জনা শুষে নিতে পারে। যন্ত্রটি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার ময়লা সাকশন পাইপের মাধ্যমে ট্যাঙ্কে জমা হয়। একটি পৃথক পানির ট্যাঙ্কও রয়েছে। যা দিয়ে প্রয়োজনে পৃথক পাইপের মাধ্যমে রাস্তায় পানি ছিটিয়েও রাস্তা পরিষ্কার করা যাবে।

এই যন্ত্রটি মেকানিক্যাল রোড সুইপার নামেও পরিচিত। এটি ধুলার দানা পর্যন্ত টেনে নেয়। চাইলে গাড়ির ট্যাংঙ্কে জমা হওয়া বর্জ্য সরাসরি ল্যান্ডফিলে নিয়েও ফেলা যায়।

জানা গেছে, গত পাঁচ বছর রাস্তা ঝাড়ু দেয়ার সময় ২৮টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ডিএনসিসির ৮ কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। স্থায়ীভাবে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন আরও ৮ জন।প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ৮৬৩ কিলোগ্রাম বর্জ্য অপসারণ করছে একমাত্র রোড সুইপারটি। এই পরিমাণ বর্জ্য অপসারণ করতে কেবল একদিনেই ৮৬ জন পরিচ্ছন্নকর্মীর প্রয়োজন হতো।

Advertisement

পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ ও গুণগত মান উন্নত করতে এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় আরও ৫/ ৬ টি অত্যাধুনিক মেকানিক্যাল রোড সুইপার কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আবুল হাসানাত মো. আশরাফুল আলম।

রাজধানীতে বর্তমানে যে একমাত্র রোড সুইপার গাড়ি কাজ করছে তার দাম প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। উন্নত এ রোড সুইপারের চ্যাসিস জাপানের বিখ্যাত হিনো কোম্পানির। আর সুইপার মেশিনটি ব্রিটেনের বিখ্যাত জনস্টন কোম্পানির।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন সরবরাহকারীরা এই রোড সুইপারের তিন বছরের গ্যারান্টি দিয়েছেন। তবে ১৩ বছরেও এটার কিছু হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। সুইপার মেশিনটির ক্ষমতা ৮৫ হর্স পাওয়ার। এটি চালু করলে যে মাত্রায় ভ্যাকুয়াম তৈরি হয়, তা আস্ত ইটও ভিতরে শুষে নিয়ে যেতে পারে।

এএস/এমএমজেড/জেআইএম