বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম হিজলা পূর্বপাড়া। এই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. মুনজুরুল আলম চৌধুরী সেনাবাহিনীর ল্যান্স নায়েক পদ থেকে ২০১৩ সালে অবসরে যান। এরপর নিজ বাড়িতে গরুর খামার করার সিদ্ধান্ত নেন। বগুড়া থেকে ছয়টি গাভি ও চারটি বাছুর দিয়ে নিজ গ্রাম হিজলা পূর্বপাড়ায় বাড়ির পাশে গড়ে তোলেন গরুর খামার। এখন তার খামারে ফ্রিজিয়ান জাতের আকর্ষণীয় যমজ ‘লাল্টু-পল্টু’ ছাড়াও রয়েছে ১৪টি গরু। লাল্টু-পল্টুকে দেখতে হিজলার পূর্বপাড়ায় ভিড় করছেন অনেকে।
Advertisement
শুক্রবার চিতলমারী উপজেলার হিজলা পূর্বপাড়া গ্রামে গিয়ে গিয়ে দেখা গেল, অসংখ্য মানুষ খামারের কাছে গিয়ে এক নজর গরু দুটিকে দেখে ফিরছেন।
এনজিওকর্মী বর্ণা মৃধা বলেন, চিতলমারী থেকে এই গরুর কথা শুনে তার ফুফুকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যানে করে হিজলায় এসেছেন গরু দেখতে। এত বড় যমজ গরু দেখে তিনি মুগ্ধ।
স্কুলছাত্র রাজেশ, সজল , প্রিতম, আবিরসহ ৬ বন্ধু বাইসাইকেল চালিয়ে হিজলায় এসেছে গরু দেখতে। এত বড় গরু তাদের এলাকায় রয়েছে জেনে তারা আনন্দিত।
Advertisement
খামারি মুনজুরুল আলম চৌধুরী জানান, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে তার খামারে একটি গাভি যমজ দুটি ষাঁড় প্রসব করে। কৃত্রিম প্রজননে জন্ম নেয়া উন্নত ফ্রিজিয়ান জাতের এই দুটি ষাঁড়ের নাম রাখেন লাল্টু ও পল্টু। মাসিক ৯ হাজার টাকায় গরুর খামার পরিচর্যার জন্য তুষার নামে এক রাখালকে রাখেন। গরুর খাবারের যোগান দিতে পাশেই রয়েছে উন্নত ঘাস চাষের নির্ধারিত জমি। স্থানীয় খড়-কুটা, ঘাস-ভুসি ইত্যাদি খাইয়ে লালন-পালন করা হয় আকর্ষণীয় ষাঁড় লাল্টু-পল্টুসহ খামারের অন্য ১৪টি গরু। সাড়ে তিন বছরে যমজ ষাঁড় লাল্টু ও পল্টুর এক একটির ওজন প্রায় ৩০ মণ।
তিনি আরও জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা বা অন্য কোনো বড় হাটে নিয়ে লাল্টু-পল্টুকে বিক্রির ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যদের আপত্তির কারণে তিনি স্থানীয় হাটেই ষাঁড় দুটিকে বিক্রির সিন্ধান্ত নেন। হাটে নেয়ার আগেই আজ সকালে হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আজমীর আলী ষাঁড় দুটি সাড়ে ৬ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছেন।
হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আজমীর আলী জানান, বৃদ্ধ বাবার ইচ্ছা পূরণের জন্য তিনি এই গরু দুটি কিনেছেন।
শওকত বাবু/আরএআর/এমএস
Advertisement