সম্প্রতি পালিত হওয়া ট্রাফিক সপ্তাহে চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে দশ দিনে ১১ হাজার ৭১২ মামলা দেয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ৯৪৫টি যানবাহন। এছাড়া যানবাহনের মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
Advertisement
চট্টগ্রাম নগরের ট্রাফিক বিভাগের উত্তর ও বন্দর জোনের অধীনে গত ৫ থেকে ১৪ অাগাস্ট পর্যন্ত এসব মামলা ও যানবাহন আটক করা হয়। চলমান ট্রাফিক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি মামলা করা হয়েছে মোটর সাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ৫ অাগাস্ট থেকে সারা দেশে ট্রাফিক সপ্তাহ পালানের ঘোষণা দেয় পুলিশ। গত শনিবার ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আরও তিনদিন বাড়িয়ে মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) শেষ হয়।
ট্রাফিক সপ্তাহের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানাতে গিয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট শুরু হওয়া ট্রাফিক সপ্তাহে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি মামলা হয়েছে বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে। ট্রাফিক সপ্তাহের কারণে আমরা অনেক ইতিবাচক ফলাফল পেতে শুরু করেছি। ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ অভিযান চলমান রাখা দরকার। তবেই নগরীর পরিবহন সেক্টর ধীরে ধীরে শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরে আসবে।’
Advertisement
সিএমপির ট্রাফিক (উত্তর) বিভাগের প্রসিকিউশন ইনচার্জ আনোয়ারুল হক জাগো নিউজকে বলেন, গত দশদিন ধরে চলা ট্রাফিক সপ্তাহে ট্রাফিক আইন অমান্য করায় প্রতিদিনই হাজারের উপরে মামলা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে লাইসেন্স সংক্রান্ত। এর মানে সড়কে যারা গাড়ি চালান তাদের মধ্যে অনেকেই গাড়ির লাইসেন্স নেই কিংবা সঙ্গে রাখেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাদের বেশি সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে, আইন মেনে তাদের ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া গাড়ির ফিটনেস না থাকা, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, উল্টো পথে গাড়ি চালানো, হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করা ও গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার দায়ে মামলা দেয়া হয়।’
সিএমপির ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালে অন্য সময়ের চাইতে বেশি মামলা হয়েছে। এর আগে সাধারণত প্রতিদিন দুই বিভাগ (উত্তর ও বন্দর জোন) মিলে সর্বোচ্চ ৩০০ মামলা হতো।’
অন্যদিকে ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা রক্ষা, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও যাত্রী সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে চালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হয়। গত ১১ আগস্ট ট্রাফিক বিভাগ (উত্তর) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) হারুন-উর-রশিদ হাজারী।
Advertisement
কর্মশালায় চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন রুটের গাড়ি চালক ও হেলপার হেলপারদের প্রজেক্টরের মাধ্যমে গাড়ি চালনা, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, বিভিন্ন সংকেত, যাত্রী সেবার মান উন্নয়নসহ ট্রাফিক সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করা হয়।
এমবিআর/আরআইপি