দাঁড়াও। শিউরে ওঠো। পিতা হারানোর গল্প শোনো। ডুকরে কাঁদো। বেদনার অশ্রু ধারায় প্রবাহিত করো শক্তির ধারা। যতদিন রবে পদ্মা-যমুনা, ততদিনই রবে পিতা হারানোর বেদনা। শোকের পাষাণে দাঁড়িয়ে গাও পিতার জয়গান।
Advertisement
১৫ আগস্ট, ১৯৭৫। সেই রক্তের ধারা ছুটলো, তা আজও প্রবাহমান। পিতার জন্য যে হৃদয় ভালোবাসার সাজানো বাগান, সেই পিতা হারানোর রক্তক্ষরণ থামে কীসে?
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গড়ছেন তারই তনয়া শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার সাড়ে চার দশকের বাংলাদেশ, জাতি এগিয়েছে বহুদূর। এগিয়েছে বিশ্ব সভ্যতাও। কিন্তু বাঙালির পূব আকাশের যে সূর্য উদিত হওয়ার প্রাকলগ্নেই অস্ত গেল, তা আজও অমানিশার ঘোরে আটকা। পিতাকে হারিয়ে জাতি আজও হাতড়িয়ে বেড়ায় সঙ্কটের প্রতিক্ষণে।
বাঙালির ইতিহাসে বিদ্রোহের আগুন জ্বলেছে হাজার বছর ধরে। হাজার বছরের বিদ্রোহের আগুনের সন্নিবেশ ঘটিয়ে জন্মেছিলেন টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটি। যার জন্মদিবসে ধরণীতে সূর্য ছড়িয়েছিল মুক্তির আভা। যার জন্ম মানেই শোষিতের জয়গান আর শোষকের প্রস্থান।
Advertisement
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কোনো সীমারেখায় আটকে যে নামের বন্দনা করা যায় না। তিনি জন্মেছিলেন বাঙালির মুক্তির তাগিদেই। তবে শুধু জাতিসত্তার প্রশ্নেই নয়, তিনি এসেছিলেন মানবমুক্তির কেতন উড়িয়ে।
বঙ্গবন্ধু মানেই বাঙালি, বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু মানেই বঞ্চিত মানুষের মুক্তির ঠিকানা। অথচ মানবতার সেই মুক্তির দূতকেই হারতে হয়েছে মানবের কাছে।
রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট। রক্তাক্ত এক অভিশপ্ত দিবসের হলিখেলা। যুদ্ধবিধস্ত একটি দেশকে যখন আলোর নিশানা দেখিয়ে এগিয়ে নিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু, ঠিক তখনই ‘আগস্ট’ নামের অন্ধকার নেমে আসে। আগস্টের এ দিনে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা হত্যা করে শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের। কেবল তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ওই সময় দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান।
ঘাতকের বুলেট নিভিয়ে দেয় ‘স্বাধীনতার সূর্য’ বঙ্গবন্ধু নামের প্রদীপ। এখানে সূর্য ওঠে রোজ। নতুনের কেতন উড়িয়ে মানুষরা স্বপ্নজয়ের প্রত্যয়ে এগিয়েও চলে নিত্যদিন। তবুও সে স্বপ্নে অপূর্ণতা রয়ে যায়। সে অপূর্ণতা যেন শুধুই স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধুকে হারানোর।
Advertisement
এএসএস/জেডএ/পিআর