যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করলেও গেল (২০১৭-১৮) অর্থবছরে দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি রফতানি আয় করেছে বাংলাদেশ।
Advertisement
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) বাজার বিশ্লেষণ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি রফতানি পণ্যের বৃহত্তম বাজার। রফতানি কার্যক্রম পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশের পণ্যের আমদানিকারক দেশসমূহের তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে রয়েছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানি করে আয় করেছে ৫৯৮ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। রফতানির প্রধান প্রধান পণ্যের মধ্যে রয়েছে- ওভেন পোশাক, নিটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল, ক্যাপ ও ক্রাসটাসিনস অন্যতম। এর মধ্যে ওভেন পোশক থেকে ৩৯৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, নিটওয়্যার রফতারি হয়েছে ১৩৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, হোম টেক্সটাইল ১৮ কোটি ডলার, ক্যাপ রফতানি হয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ডলার এবং ক্রাসটাসিনস্ এক কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
Advertisement
আলোচিত সময়ে দেশের মোট রফতানি আয় ওভেন থেকে ২৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ, নিটওয়্যার থেকে ৯ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং হোম টেক্সটাইল থেকে ১৮ দশমিক ০৪ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় হয়েছিল ৫৮৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।
২০০৩ সালে রানাপ্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক অধিকারের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র তার বাজারে বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে। ‘যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জিএসপি সুবিধার কোনো প্রয়োজন নেই’ উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ একপর্যায়ে বলেছিলেন, ‘আমরা যতই অগ্রগতি করি না কেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা দেবে না। সব শর্ত পূরণ করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র এ সুবিধা দেবে না। এখন আর আমাদের এ সুবিধার প্রয়োজনও নেই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে; তাই আগামীতে এ সুবিধার আর দরকার হবে না।’ এখন জিএসপি প্লাসের সুবিধা আদায়ের কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বে শুল্কমুক্ত অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা পাওয়াকেই জিএসপি বলে। এ সুবিধায় যে দেশে পোশাক যাবে, সে দেশে কোনো প্রকার ভ্যাট, ট্যাক্স দিতে হয় না। এজন্য বায়ারদের টাকা কম খরচ হয় এবং তারা বেশি বেশি পণ্য বাংলাদেশ থেকে কিনতে পারে। এতে পোশাক মালিকদের বেশি লাভ হয়। সাধারণত বিদেশি বায়াররা সেসব দেশ থেকে পোশাক কেনে, যেসব দেশে জিএসপি সুবিধা আছে।
Advertisement
বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের প্রধান প্রধান বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে বিশ্বের চারটি বাজার থেকে। এর মধ্যে ২৮টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে এসেছে দুই হাজার ১৩৩ কোটি ৪৫ লাখ মার্কিন ডলার যা মোট রফতানির ৫৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দেশটি থেকে রফতানি আয় হয়েছে ৫৯৮ কোটি ৩৩ লাখ ডলার।
কানাডা থেকে ১১১ কোটি ৮৭ লাখ ডলার এবং জাপানে পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ১১৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে চার বাজার থেকে মোট রফতানি আয় হয়েছে দুই হাজার ৯৫৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলার বা ৮০ দশমকি ৬৩ শতাংশ।
এসআই/এমএআর/পিআর