ফিচার

ঈদের বাকি আছে ৩০ দিন!

মুঈদ হাসান তড়িৎছোটবেলায় ঈদ আসার অন্তত মাস খানেক আগে থেকে আমার প্রস্তুতি শুরু হতো। পুরো ৩০ দিনের জন্য “ঈদের বাকি আছে ৩০ দিন”, “ঈদের বাকি আছে ২৯ দিন”। এভাবে প্রতিদিন কাগজ টানিয়ে রাখতাম বাসার দেয়ালে। কোরবানি ঈদের আগের ৭ দিনতো মহা ব্যস্ততায় কাটত!  কার বাসায় কত বড় গরু কেনা হয়েছে, কোন গরুর দাম সবচেয়ে বেশি, শিং লম্বা না খাটো এসব বিষয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরুশুমারি করতাম! নিজেদের গরু কিনতে গেলে আব্বুকে দামি গরু কিনতে বলতাম যেন সবাইকে বলতে পারি! গরু কেনা শেষ হলে গরুর গলার দড়ি ধরে বাসায় নিয়ে আসার সময় অনেক মানুষ দাম জিজ্ঞাসা করত, সবাইকে জোরে দাম বলে দিতাম। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত চলত গরুর যত্নআত্তি। ঈদের দিন সকালে মনটা খুব খারাপ হয়ে যেত। গরু কোরবানির সময়তো ফুঁকরে ফুঁকরে কেঁদে চোখ লাল করে ফেলতাম।এবার আসা যাক নতুন পোশাক কেনা প্রসঙ্গে।ঈদের আগে নতুন পোশাক কিনে কাউকে দেখতে দিতাম না যদি ঈদ পুরনো হয়ে যায়! আর যদি কেও জোর করে দেখে ফেলত তাহলে তো ঐ পোশাক পরব না বলে কেঁদে বুক ভাসাতাম।ঈদের দিন সকাল থেকেই সালামির ভাবনায় থাকতাম।কার কার কাছ থেকে সালামি নেব তা আগে থেকেই ঠিক করা থাকতো। সালামির নামে চলত চাঁদাবাজি! সালাম করেই সালামি চেয়ে বসতাম। কম দিলে তো নেওয়ার প্রশ্নই আসে না! সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়াতাম, আড্ডা দিতাম, মজার মজার খাবার খেতাম, নাগরদোলায় উঠতাম, পুতুল নাচ দেখতাম আরও যে কত আনন্দ করতাম!এখন বয়স তারুণে পা দিয়েছে। শৈশবের ঈদগুলো খুব বেশি মিস করি।তবে শৈশবের আনন্দগুলো ভুলবার নয়। জীবনের ব্যস্ততার মাঝে,ফেলে আসা সৃতিগুলো আজও আনন্দ দেয়...

Advertisement