ভাই মারা গেছেন নয়দিন আগেই। মরদেহে পচন ধরেছিল। তবুও তার সৎকার না করে ঘরেই রেখে দিয়েছিলেন আরেক ভাই। এই ঘটনা ঘটেছে কলকাতার চন্দন নগরে।
Advertisement
ক’দিন ধরেই ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন প্রতিবেশিরা। কিন্তু ঠিক কিসের গন্ধ তা কেউ বুঝতে পারছিলেন না। সোমবার চন্দন নগরের বোরো চাঁপাতলার ওই বাড়িটিতে যান এলাকাবাসী। বড় ভাই গোপীনাথ মুখোপাধ্যায়ের (৬৫) পচাগলা দেহ নিয়ে নয়দিন কাটিয়ে দিয়েছেন তার ভাই পঞ্চান্ন বছর বয়সী অপূর্ববাবু।
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, মৃত গোপীনাথবাবু এবং তার ভাই দু’জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন। কেউ কোনও কাজ করতেন না। ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। কেউ খাবার দিলে খেতেন না দিলে না খেয়েই কাটিয়ে দিতেন তারা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, কয়েকদিন ধরেই এলাকায় দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন বোরো চাঁপাতলার বাসিন্দারা। সোমবার অপূর্ববাবুদের বাড়ির সামনে দুর্গন্ধের মাত্রা বাড়ায় তাদের সন্দেহ হয়। তারা কড়া নাড়েন। অপূর্ববাবু বেরিয়ে এসে সোজা জানিয়ে দেন, দাদা অসুস্থ, ঘুমাচ্ছেন। এখন আসা যাবে না। তার কথায় সন্দেহ যায়নি প্রতিবেশিদের। পুলিশে খবর দেন তারা।
Advertisement
ওই একতলা বাড়িতে একই ঘরে দাদার সঙ্গে থাকতেন অপূর্ববাবু। তারা চার ভাই। সাংসারিক অশান্তির জের ধরে বড় ভাই এবং ছোট ভাই অন্যত্র থাকেন। গত ৪ আগস্টও এলাকার এক বাসিন্দা দুই ভাইয়ের জন্য রাতের খাবার দেন।
গোপীনাথবাবুর মরদেহ উদ্ধারের পরে অপূর্ববাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, দাদা ঘুম থেকে না-ওঠায় অসুস্থ মনে করে তিনি আর ডাকেননি। তারপর থেকে প্রতি রাতে দাদার পাশে একই খাটে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধারের সময়ও বাধা দিয়ে অপূর্ববাবু বলতে থাকেন, দাদা ঘুমাচ্ছে। এখন তোলা যাবে না।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বেশ কয়েক বছর আগে বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরেই দুই ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। তবে এমন কিছু হবে সেটা কেউ ভাবেননি।
টিটিএন/জেআইএম
Advertisement