বিনোদন

শাকিবের সঙ্গে আমি সফল বলেই তারা ব্যক্তিগত আক্রমণ করে : বুবলী

২০১৬ সাল। কোরবানি ঈদ। সিনেমার বাজারে গেল কয়েক বছরের মন্দার ধারাবাহিকতা চলছে। তবে ঈদকে ঘিরে খানিকটা চাঙা হয় বাজার। সেই আশা প্রত্যাশার বাজারে নতুন মুখ? বিষয়টি খুব একটা সহজভাবে হজমের বিষয় নয় হল মালিকদের জন্য। কিন্তু সঙ্গে যদি থাকেন শাকিব খান, অনেক কিছুই হজম হতে পারে, অনেক হিসেব পাল্টে যেতে পারে। হলোও তাই। একে একে দুটি ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে দেখা গেল নতুন মুখ শবনম ইয়াসমিন বুবলীকে। সব শঙ্কা আর ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে বাজিমাত করেই অভিষিক্ত হলেন তিনি। ‘বসগিরি’ ও ‘শুটার’ নামের সেই দুই ছবির পর শাকিব খানের সঙ্গে জুটি হিসেবে সবচেয়ে নির্ভর নাম এখন বুবলী। তারা পেয়েছেন জনপ্রিয়তাও, গড়ে উঠেছে তাদের জুটির দর্শকও।

Advertisement

এরপর সব ঈদেই ছবি নিয়ে হাজির হয়েছেন শাকিব-বুবলী। আসছে কোরবানি ঈদেও মুক্তি পাবে তাদের ‘ক্যাপ্টেন খান’ নামের একটি ছবি। বর্তমানে এই ছবির শুটিং করতেই থাইল্যান্ডে রয়েছেন নায়ক-নায়িকা। সেখানে চলছে গানের দৃশ্যায়ন।

সেখানে শুটিংয়ের অবসরেই জাগো নিউজের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতায় ছিলেন বুবলী। শাকিব খানের সঙ্গে তার প্রেম, বিয়ে ও সম্পর্ক ভাঙনের নানা গুজব-গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন। জানালেন ঈদ নিয়ে নানা কথা। সেইসঙ্গে প্রসঙ্গ ছিল ‘ক্যাপ্টেন খান’, সাম্প্রতিক চলচ্চিত্রাঙ্গন ও বুবলীর বিয়ের পরিকল্পনাও। আলাপের চুম্বকাংশ তুলে ধরেছেন লিমন আহমেদ-

জাগো নিউজ : দেখতে দেখতে কোরবানির ঈদ দুয়ারে দাঁড়িয়ে। এবারের ঈদ কোথায় করবেন? বুবলী : ঈদ সবসময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই করা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। ইনশাল্লাহ! ঈদের আগেই সবরকম শুটিং শেষ করে নেবো। আর ঈদের ছুটিতে ঢাকা কয়েকদিন খুব ফাঁকা থাকে। তখন শহরটাকে খুব ভালো লাগে। ঘুরতে অন্যরকম আনন্দ পাই। এই বাড়তি আনন্দটা আমি কখনও মিস করতে চাই না।

Advertisement

জাগো নিউজ : নিজের অায় দিয়ে কখনো কোরবানির গরু কিনেছেন? নাকি পুরোটাই পারিবারিকভাবে সামলানো হয়? বুবলী : না, এখনও পর্যন্ত নিজের আয় দিয়ে কোরবানির গরু কেনা হয়নি। সবসময় বাবাই গরু কিনে থাকেন। বলা যেতে পারে পারিবারিকভাবেই এই ব্যাপারটি সামলানো হয়। তবে এবার পরিকল্পনা আছে নিজের আয়ে কোরবানির গরু কেনার। নিজের টাকায় গরু কোরবানির আনন্দ বা তৃপ্তিটা এবার পেতে চাই।

জাগো নিউজ : শৈশব-কৈশোরে অনেকেরই গরুর হাটে যাবার অভিজ্ঞতা থাকে। আপনি গিয়েছেন কখনো? বুবলী : কখনো হাটে যাওয়া হয়নি। তবে ছোটবেলা থেকেই কোরবানির গরু নিয়ে আমাদের বাসায় একটা উৎসবের মতো হয়। যখনই কোরবানির গরু কিনে বাসায় আনা হয় তখনই সেই গরুর নামকরণ করা হয়। যেমন গত বছর আমাদের গরুর নাম দেয়া হয়েছিল ‘পঙ্খীরাজ’। তার আগেরবার নাম দিয়েছিলাম ‘যুবরাজ’। এমন ধরনের নানান নাম হয়। কিন্তু ঈদের দিন কোরবানির সময় আসলে তখন আবার মন খারাপ হয়। কারণ ওই গরুটিকে নিয়ে মাতামাতি করতে করতে ওর প্রতি এক ধরনের মায়া জন্মে যায়। কিন্তু কিছুই করার থাকে না। এটাই নিয়ম......

জাগো নিউজ : কোরবানি ঈদের সেরা স্মৃতি বা মুহূর্ত কোনটি ?বুবলী : এখনও পর্যন্ত আমার কাছে সেরা কোরবানি ঈদ ২০১৬ সালে কাটিয়েছি। সে বছর চলচ্চিত্রে আমার অভিষেক হলো কোরবানি ঈদে, একসঙ্গে দুটি ছবিতে। সেই অনুভূতি কাউকে বলে বুঝানো যাবে না। খুব কম নায়িকারই হয়তো এমন ভাগ্য হয়েছে যে অভিষেক ঘটেছে ঈদে এবং একসঙ্গে দুটি ছবি নিয়ে। আর যখন দুটি ছবিই ব্যবসা সফল হলো তখন আনন্দটা ছিল বাঁধ ভাঙা।

জাগো নিউজ : এবারের ঈদ নিয়ে বিশেষ কোনো আয়োজন বা পরিকল্পনা আছে?বুবলী : তেমন কোনো বিশেষ পরিকল্পনা নেই। ঈদের দিন সাধারণত বাসাতেই থাকা হয়। তবে নায়িকা হবার কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। যেহেতু ঈদে আমার অভিনীত ছবি মুক্তি পায় তাই দর্শকদের সঙ্গে ছবি দেখাসহ নানারকম প্রচারে কখনো কখনো অংশ নিতে হয়। এটা অবশ্য ঈদ উৎসবে বাড়তি আনন্দই যোগ করে দেয়।

Advertisement

জাগো নিউজ : বলা হয়ে থাকে, বাঙালি নারী চুলও বাঁধে এবং ভালো রান্নাও করতে পারে। নিশ্চয় আপনিও ভালো রাঁধেন। নিজের রান্না করা প্রিয় মেন্যু কোনটি? বুবলী : নিজের রান্না করা অনেক মেন্যুই আমার প্রিয়। যদিও আমি পরিবারের সবার ছোট বলে আদর করে আম্মু, বড় আপুরা খুব একটা রান্না করতে দিতে চায়নি কখনো। কিন্তু আমি প্রায়ই রান্না করি। তাদের কাছ থেকে অনেক রান্না শিখেছি। রান্না একটি শিল্প। আর আমি মনে করি এটি মেয়েদের সৌন্দর্য আরো দ্বিগুণ করে তুলে। একজন ভালো রাঁধুনি বোন, স্ত্রী, ভাবী, ও মায়ের কদর সব সংসারেই থাকে। ঈদের মতো উৎসবগুলোতে বিশেষ প্রিয় কিছু মেন্যু তৈরি করার চেষ্টা করি। সামনে যেহেতু কোরবানি ঈদ তাই গরুর মাংসের কয়েকটা রেসিপি থাকবে। যেমন ঝাল আচারি গরুর মাংস, গরুর কালো ভুনা, বিফ টমেটো এসব। বোনদের বিয়ের পর অনেক সময় আম্মুর সঙ্গে নিজেও রান্না করি। সেসব রান্নাতেই ঈদের অতিথিদের আপ্যায়ন করেছি।

জাগো নিউজ : ঈদের সেলামি আনন্দের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। আপনি এখনো কী সেলামি পান?বুবলী : এখনও ঈদে সেলামি পাই পরিবারের বড়দের কাছ থেকে। কারণ যত বড়ই হইনা কেন বাবা-মা ও বোন-দুলাভাইদের কাছে সবসময় ছোটই আমি। তবে এখন সেলামি দিতেও হয়। ছোট ভাই আছে, আত্মীয় স্বজনদের অনেককেই সেলামি দিতে হয়। ঈদের দিন আসলে সেলামি দেয়া-নেয়া করতে করতেই অনেকটা সময় চলে যায়। বেশ মজার ব্যাপারগুলো। এই সেলামি দেয়াতেও যে আনন্দ আছে সেটা এখন টের পাই।

জাগো নিউজ : শাকিব খান এবং আপনার মধ্যে খুব ভালো বন্ধুত্ব। ঈদে আপনারা কখনো গিফট দেননি একে অপরকে? সেরা গিফট কী পেয়েছেন তার কাছ থেকে? বুবলী : এখন পর্যন্ত শাকিব খানের কাছ থেকে পাওয়া ঈদের সেরা গিফট ‘বুবলী বুবলী’ গানটি। এটি ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া আমার প্রথম ছবি ‌‘বসগিরি’র। গানটি আমার কাছে বিশেষ গিফট এই কারণে, গানটির মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন শাকিব খান। নিজের নায়কের ইচ্ছায় প্রথম ছবিতেই নিজের নামে গান পাওয়ার অনুভূতি আজীবনই মনে রাখার মতো স্মৃতি। উনার কাছে এই গানের জন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। গানটি আমাকে আলাদা করে জনপ্রিয়তাও দিয়েছে। আমার নামটি ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। পাশাপাশি এই গানের সংগীত পরিচালক, গীতিকার, কণ্ঠশিল্পী, ছবির প্রযোজক ও পরিচালককেও ধন্যবাদ। সবার আন্তরিকতাতেই ‘বুবলী বুবলী’ গানটি দেশব্যাপী আলোচিত ছিল।

জাগো নিউজ : আসছে ঈদে মুক্তি পাবে আপনার ‘ক্যাপ্টেন খান’ ছবিটি। ছবিতে আপনার চরিত্রের স্পেশালিটি কী থাকবে? বুবলী : আমি চাই দর্শক হলে গিয়ে ছবিটি উপভোগ করুক। তারা নিজেরাই আবিষ্কার করুক সব চরিত্রের বিশেষত্বগুলো। আমি কেবল বলবো, অসাধারণ গল্প ও নির্মাণের ছবি ‘ক্যাপ্টেন খান’। এখানে প্রতিটি চরিত্রই স্পেশাল। দর্শককে বিনোদিত করার ফুল প্যাকেজ ‘ক্যাপ্টেন খান’।

জাগো নিউজ : গেল দুই বছরে ঈদের নায়িকা হিসেবে নিয়মিত আপনি। বলার অপেক্ষা রাখে না, সফল নায়িকাও। এই বিষয়টি কেমন উপভোগ করেন? বুবলী : নিঃসন্দেহে এটি একটি বড় প্রাপ্তি। ব্যাপারটি যেমন উপভোগ করি তেমনি প্রতিনিয়ত আরো ভালো ভালো ছবির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার একটি চ্যালেঞ্জ কাজ করে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবার সমর্থন চাই আমি। আর চলচ্চিত্র সাংবাদিক ভাই-বন্ধুরা আগেও যেমন পাশে থেকেছেন, সাহস ও পরামর্শ দিয়েছেন ভবিষ্যতেও এমনটাই থাকবেন বলে প্রত্যাশা করি।

জাগো নিউজ : অভিষেকের পর থেকে বলা যায় প্রায় সব ছবিই ব্যবসা সফল। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির এই মন্দাবস্থাতেও নায়িকা বুবলীর সাফল্যের রহস্য বা মূলমন্ত্রটা কী?বুবলী : বেশ গম্ভীর প্রশ্ন! এক কথায় এর উত্তর দেয়া অসম্ভব। আসলে সফলতার কোনো শেষ নেই, এটি চলমান। আমি যদি কিছুটাও সফল হতে পারি তা আমার কাজের প্রতি ভালোবাসার জন্য, এমনটাই মনে করি আমি। যে কোনো কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকলে এবং পরিশ্রম আর ধৈর্যশীল হয়ে এগিয়ে যেতে পারলে সফলতার দেখা পাওয়া যায়। তবে আমি নিজেকে চূড়ান্ত সফল ভাবি না। বরং আমি মনে করি এই ইন্ডাস্ট্রির মন্দাবস্থা কাটাতে আমাকে আরও অনেক সফল হতে হবে।

জাগো নিউজ : শাকিব খানকে ছাড়া বুবলী কতটা সফল সে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। আপনি এই বিষয়ে কী বলবেন?বুবলী : শাকিব খানের মতো একজন বড় মাপের অভিনয় শিল্পীর সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করা অনেক বড় একটা ব্যাপার। পাশাপাশি চ্যালেঞ্জিংও। কারণ আমি একদম নতুন হয়ে একজন সুপারস্টারের সঙ্গে অভিষিক্ত হয়েছিলাম ঢাকাই সিনেমাতে। এই অবস্থায় কিন্তু নতুন শিল্পীর ওপরই দর্শকদের দৃষ্টি বেশি থাকে। কারণ সবাই দেখতে চায় সুপারস্টারের সঙ্গে নতুন শিল্পী কেমন করলো। আর যদি সেটা নায়িকা হয় তবে তো চুলছেড়া বিশ্লেষণ চলে তার পারফরম্যান্স নিয়ে। আমার বেলাতেও তেমনটি হয়েছে। তাই আমার জন্য শাকিবের নায়িকা হয়ে কাজ করার ব্যাপারটি যেমন ইতিবাচক মনে হয়েছিল তারচেয়েও বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি আমার দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞ তারা আমাকে অনেক ভালোবাসা দিয়ে চলেছেন। আর শাকিব খান ছাড়া আমি কতটা সফল তা সময় বলে দিবে যখন অন্য হিরোদের সঙ্গে কাজ করবো।

দর্শক যদি অন্য হিরোদের সাথে আমার জুটি পছন্দ করেন তাহলে অবশ্যই সফল হবো। এই ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিব খানের সঙ্গে আমি ছাড়া আরও অনেকেই জুটি বেঁধে কাজ করেছেন। একজন নায়িকা ছাড়া আর কেউই কিন্তু সফল হতে পারেননি। এখন আমি পারছি। এখানে সমালোচকরা যদি আমার কোনো নিজস্ব পরিশ্রমের সাফল্য খুঁজে না পায় তবে আমি আর কী করতে পারি! তবে আমি প্রতিনিয়তই শাকিব খানের কাছ থেকে শিখছি ও জানছি। তিনি অভিনয়ের বিরাট আঙিনা আমার কাছে। তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা একদিন আমাকে আরও অনেক শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। সমালোচনায় আপাতত কোনো মনযোগ নেই।

জাগো নিউজ : চলচ্চিত্রের এই দুঃসময় কাটাতে আপনার তিনটি পরামর্শ বলুন.....বুবলী : আমাদের এখানে বর্তমানে অনেক ভালো ভালো চলচ্চিত্র হচ্ছে। অনেকে মিলেই চেষ্টা করছেন দর্শকদের হলমুখী করার। অনেক সমস্যা চিহ্নিত করা হচ্ছে, সেগুলোর সমাধানের চেষ্টাও করছেন অনেকে। বিশেষ করে শাকিব খান যোগ্য নেতৃত্বই দিচ্ছেন ইন্ডাস্ট্রির। তিনি এই অসময়েও দর্শক হলে টানছেন। ভালো কিছু ছবি করতে পারছেন। এছাড়া আরও অনেকেই ভালো ছবির জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সেইদিক থেকে আমি নিজের ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু ইন্ডাস্ট্রিকে দেখি বা ধারণ করি আমার মনে তিনটি পরামর্শ এমন হতে পারে- ১. সবার মধ্যে ভালো ছবি করার সুস্থ প্রতিযোগিতা ও পরিবেশ থাকতে হবে২. যারা আমাদের গুরুজন আছেন তারা একসঙ্গে বসে চলচ্চিত্র উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ নিয়ে তা বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করবেন৩. এখনকার দর্শকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে যেমন ভালো গল্পের ভালো ছবি নির্মাণ করতে হবে তেমনি হলগুলোকেও আধুনিকায়ন করতে হবে

জাগো নিউজ : এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে কথা বলি। বিদেশে সিনেমার শুটিং করতে গেলে কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখেন? বুবলী : বিদেশে শুটিং করা সত্যি অনেক কষ্টের। তখন একটা জিনিসই মাথায় থাকে শুটিংটা যেনো সুন্দরভাবে শেষ হয়। আর সেজন্য নিজেকে যথা সম্ভব প্রস্তুত রাখি, মনযোগী রাখি।

জাগো নিউজ : এখন পর্যন্ত প্রিয় বিদেশি লোকেশন কোনটি? যেখানে আছে বিশেষ কিছু অভিজ্ঞতা.....বুবলী : দেশের পাশাপাশি বিদেশেও অনেক সুন্দর সুন্দর লোকেশনে কাজ করেছি। একেক দেশের একেক রকম সৌন্দর্য। তবে ইউরোপের দেশগুলো বেশি সুন্দর আর গোছানো। বিদেশে শুটিং করতে গেলে যখন বিদেশিরা বাংলাদেশের ছবির শুটিং দেখতে আসে, জানতে চায় এখানকার দেশ এবং কালচার নিয়ে তখন ওগুলোই সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে।

জাগো নিউজ : এবার ব্যক্তিগত বিষয়ে কিছু আলাপ করা যাক। শাকিব খানের সঙ্গে আপনার প্রেম-বিয়ে নিয়ে অনেক মুখরোচক গুঞ্জন শোনা যায়। মাঝে মধ্যে সংবাদও প্রকাশ হয় এ নিয়ে। আপনারা প্রেম করছেন, কেউ কেউ দাবি করে আপনারা বিয়েও করেছন। আবার সম্প্রতি আলোচিত হচ্ছে আপনাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কোনো কারণে শাকিব খান আপনার ওপর অসন্তুষ্ট। নানামুখী গুঞ্জনে আপনাদের জুটির ভক্তদের মনে অনেক কৌতুহল ও বিভ্রান্তি। এ নিয়ে আপনার বক্তব্যটা জানতে চাই......বুবলী : শাকিবের সঙ্গে আমি সফল বলেই আমাকে নিয়ে এত ব্যক্তিগত আক্রমণ। শাকিব খান আমার ফিল্ম ক্যারিয়ারের অভিভাবক। তার অনুপ্রেরণাতেই আমি সিনেমায় এসেছি। আমার কাছে তার সম্মান অনেক ওপরে। এটুকু সবাই জানেন ও বুঝেন। শাকিব খানের কাছ থেকে আমি প্রতিনিয়ত শিখি। কাজের ব্যাপারে উনি বরাবরই অনেক সিরিয়াস। উনার সঙ্গে শুটিংয়ে ভালো পারফর্ম করলে যেমন প্রশংসা করেন তেমনি যেখানে আরো ভালো করা যেতো সেখানে ধমকও দেন। এমনভাবে ধমক দেন যে আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। ধমক আস্তেই দেন কিন্তু আমি বুঝি যে ওটা কতটা ভয়ঙ্কর। পরে অবশ্য একটু ভালো হলেই মন ভালো করে দেন প্রশংসা করে। আমি মনে করি এই কেমিস্ট্রিটা আছে বলেই আমরা পর্দায় সফল জুটি হতে পারছি। আমাদের জুটি পর্দাতেই হিট, বাস্তব জুটি হওয়ার ব্যাপারে কখনও চিন্তাই করিনি কেউ।

শাকিব-বুবলী জুটির সাফল্যে গুটি কয়েক লোকজন রয়েছে যারা সবসময় কিছুটা হিংসাত্মক মনোভাব দেখায়, তাদের সব কিছুতেই সমস্যা। আমরা একসঙ্গ কয়েকটা কাজ করলে বলে প্রেম আছে, আবার একটু বিরতি নিয়ে কাজ করলে বলে মান অভিমান হয়েছে, জুটি ভাঙছে; কি আজব মানসিকতা তাদের! এরা কোনো কিছুতেই সন্তষ্ট না। তাই এসব কথায় কান দিতে চাই না। আমাদের ভক্তদেরও বলবো এসব গুঞ্জন এড়িয়ে চলতে। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। শাকিব খান গত কয়েক বছরে আমি ছাড়া দেশে বিদেশে অনেক নায়িকাদের সঙ্গেই কাজ করেছেন। সহশিল্পী হিসেবে আমরা আমাদের বাইরে কোথাও কাজ করলে সেই কাজ নিয়েও কথা বলি এবং শুভকামনা জানাই একে অপরকে। এখানে শাকিব-বুবলী জুটি ভাঙার কিছু নেই। মশারও তো সংখ্যা আছে তাই শুধু ছবির সংখ্যা বাড়িয়ে আমি জুটি বিচার করতে চাই না। যেখানে মান থাকবে না। মানসম্পন্ন কাজ অল্প হলেও ভালো। আমি আর শাকিব খান কিন্তু বছরে ১/২টা কাজ করি। সেজন্য তিন বছরে আমাদের মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা মাত্র ছয়। দেশে বিদেশে চলচ্চিত্রে সব বড় বড় জুটির ছবির সংখ্যা কিন্তু কম অথচ তারা যুগ যুগ বেঁচে আছে মানুষের হৃদয়ে। তাই কেউ অন্য কোথাও কাজ করলে জুটি ভেঙে গেছে এটা ভাবা সঠিক নয়।

দেখুন, তারাই দাবি করে শাকিব খান ছাড়া আমি সফল নই। আবার শাকিব খান ছাড়া অন্য নায়কদের সঙ্গে কাজ করে এক্সপেরিমেন্ট চালাতে চাইলে তারাই কিন্তু বলে বেড়াবে শাকিব খানের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তাই অন্যদের সঙ্গে কাজ করছি! ব্যাপারটা হাস্যকর নয় কী? আসলে সিনেমার মতো একটি বিশাল শিল্পে নায়ক-নায়িকার রসায়ন নিয়ে অনেক গুজব চাউর হয়। রাজ্জাক-কবরীদের আমলেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে। আমি সেসব নিয়ে ভাবি না। আর শাকিব খানকে যতটুকু চিনি জানি তিনিও এসবে মনযেোগী নন। তার চিন্তায় ভালো সিনেমা, দর্শক হলে ফিরিয়ে আনা। যারা এসব গুঞ্জন নিয়ে আছেন তারাই একসময় বলবেন যে অযথা এসব ভেবে সময় নষ্ট করেছিলেন। আগামীতে আমাদের একসঙ্গে কিছু কাজ নিয়ে কথা হচ্ছে যা দর্শক শিগগিরই জানতে পারবেন।

জাগো নিউজ : তাহলে আপনার বিয়ের দাওয়াত কবে পাচ্ছি...?বুবলী : একটু তো ধৈর্য ধরতেই হবে। বিয়ে একটি সামাজিক বিষয়। এখনও বিয়ে নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। যখন বিয়ে করবো ইনশাল্লাহ আমার বিয়েতে আমার পরিচিত সবাইকে দাওয়াত করবো। তবে সবার আগে বিয়ের কার্ড সাংবাদিক ভাইদের কাছেই পৌঁছাতে চেষ্টা করবো। হা হা হা......

এলএ