বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ শিহিপাশা এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী রাসেল বেপারী (২৮) হত্যার ঘটনায় আটজনের নামোল্লেখসহ ছাত্রলীগের ২০ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।শনিবার বিকেলে নিহতের মা নুরুন্নাহার বেগম বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় এ হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। ঘটনার পর একদিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে পাওনা টাকার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজনে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে রাসেল বেপারীকে হত্যা করা হয়। এসময় রাসেলের সহযোগী রিন্টু সরদার গুরুতর আহত হন।এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা সাগর সেরনিয়াবাত, মাসুদ, আতিক, তামিম, সজীবসহ আটজনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়। আসামিদের গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নিহত রাসেল বেপারীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।রাসেল বেপারীর বাবা নূরুল ইসলাম বেপারী জানান, মোটরসাইকেল ক্রয়ের ২৭ হাজার টাকা পাওনা ছিল আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরল গ্রামের ছোহরাব হোসেন সেরনিয়াবাতের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সাগর সেরনিয়াবাতের কাছে। ১৯ হাজার টাকা দেয়ার পর বাকি সাত হাজার টাকা নিতে মোবাইল করে শুক্রবার বিকেলে আগৈলঝাড়া আসতে বলেন সাগর সেরনিয়াবাদ। এজন্য রাসেল তার সহযোগী রিন্টু সরদারসহ আগৈলঝাড়াতে গেলে পথে দক্ষিণ শিহিপাশা এলাকার মুড়িয়ার সড়কে কুপিয়ে আহত করে সাগর ও তার লোকজন। পরে তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে আনা হলে রাত সোয়া ৮টায় রাসেল মারা যায়।স্থানীয়রা জানান, দাবিকৃত এক লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় ছাত্রলীগের ১০/১২ ক্যাডাররা বৃহস্পতিবার বিকেলে গৌরনদী উপজেলার গৌরনদী-পয়সারহাট সড়কের শাওড়া এলাকায় সেন্ট পিটার ফ্লিলিং স্টেশনে (পেট্রল পাম্পে) হামলা চালিয়ে কর্মচারী খলিলুর রহমানকে বেদম মারধর করে নগদ প্রায় ১৯ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। এ ব্যাপারে ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার শেখ আক্তার হোসেন বাদী হয়ে রাসেল বেপারী, হীরা বেপারী, দিপুসহ ছাত্রলীগের ১১ ক্যাডারকে আসামি করে রাতে গৌরনদী থানায় মামলা দায়ের করেন।শুক্রবার সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি ছাত্রলীগ ক্যাডার হীরা বেপারী (৩২) ও তার ভাই রাজ্জাক বেপারীকে (২৫) গ্রেফতার করে। এই মামলার ২ নম্বর আসামী রাসেল ব্যাপারী এবং তার সহযোগী রিংকু পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে বিকেলে পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামে যান। এ সময় ওই গ্রামের বাসিন্দা ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী খলিলের ভাগ্নে আগৈলঝাড়ার ছাত্রলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনির এবং তার সহকর্মী ছাত্রলীগ নেতা সাগর সেরনিয়াবাত রাসেলসহ অন্যান্যরা চিনে ফেলেন এবং তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এসময় স্থানীয়দের নিয়ে তারা রাসেল ও রিংকুকে বেদম পিটিয়ে-কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করলে রাতে রাসেলের মৃত্যু হয়।## আগৈলঝাড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী নিহতসাইফ আমীন/বিএ
Advertisement