দেশজুড়ে

রাজশাহী বিআরটিএতে গাড়ি চালক-মালিকদের ভিড়

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) রাজশাহীর কার্যালয়ে এখন উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ অপেক্ষায় সেবা নিতে গিয়ে বাড়ছে ভোগান্তি। এতে সেবা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন কর্মীরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিআরটিএ’র রাজশাহী কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, যানবাহনের লাইসেন্স, ফিটনেস সনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র ঠিক করাতে বিআরটিএ কার্যালয়ে এসেছেন গাড়ি চালক ও মালিকরা।

সেখানেই কথা হয় নগরীর ভদ্রা এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস আলীর সঙ্গে। তিনি সরকারি একটি দফতরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। জমানো অর্থে ২০১৫ সালে অটোরিকশা কিনেছিলেন। কয়েক বছর দিব্যি রাস্তায় চলেছে অটোরিকশা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রাস্তায় কঠোর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে রাস্তায় নামতে পারেননি চালক। বাধ্য হয়ে কাগজপত্র তৈরির জন্য এসেছেন বিআরটিএ দফতরে। এমন অনেক চালক ও মালিক প্রতিদিনই ধরনা দিচ্ছেন বিআরটিএ কার্যালয়ে। নগরীতে হাজারো অটোরিকশা-থ্রি হুইলার নিবন্ধন না নিয়েই বছরের পর বছর ধরে চলছে বলেও জানান তিনি।

বিআরটিএ দফতরে ফিটনেস সনদ নিতে এসেছিলেন বাস মালিক জাহিদ মিয়া। তিনি জানান, দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে। সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। সেবা দিতে গিয়েও নাজেহাল বিআরটিএ কর্মীরাও। অপেক্ষার পর সেবা না পাওয়ায় আক্ষেপ তার।

Advertisement

তিনি বলেন, গাড়ির সাইড ভিউ মিরর ভাঙা। তাছাড়া কয়েকটি স্থানে রঙ উঠে গেছে। এগুলো মেরামত না করলে ফিটনেস ছাড়পত্র দেবে না বিআরটিএ। এ সনদ না পাওয়া পর্যন্ত রাস্তায় নামবেন না তিনি। রাজশাহীর অর্ধেক মালিক এই ভোগান্তিতে পড়েছে বলেও জানান এই বাস মালিক।

অপেক্ষার ফল পেয়েছেন বাস চালক সিহাব বিশ্বাস। তিনি জানান, লাইসেন্স নবায়ন করতে এসেছিলেন। ঘণ্টা তিনেক পর তার কাজ হয়েছে। লাইসেন্স মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় এই ক’দিন তিনি গাড়িতে ওঠেননি। অনেকেই ঝামেলা এড়াতে বাসায় বসে আছে। কেউ কেউ পেটের দায়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নামছেন বলেও জানান এই চালক।

এদিন বিআরটিএ কার্যালয়ে কয়েকজন সেবা প্রার্থীকে দালালদের সহায়তা নিতেও দেখা গেছে। তবে বিআরটিএ’র কঠোর অবস্থানের কারণে পাত্তা পায়নি দালাল চক্র। দুপুরে সুমন মিয়া (৩৮) নামের দালালকে আটক করে বিআরটিএ। তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেয়া হয় তখনই। প্রথমবারের মত তাকে সতর্ক করে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রনী খাতুন ৫০০ টাকা জরিমানা করেন। গণউপদ্রব সৃষ্টির দায়ে অনাদায়ে তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে ছাড়া পান নগরীর উত্তর নওদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআরটিএর রাজশাহী অফিস প্রধান ও সহকারী প্রকৌশলী (ইঞ্জিন) এএসএম কামরুল হাসান। তিনি বলেন, এ ক’দিন সেবা গ্রহিতাদের চাপ অত্যাধিক। তারপরও কর্মীরা আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে কারিগরি ত্রুটির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

বিআরটিএ রাজশাহী অফিস জানিয়েছে, গত ৫ আগস্ট থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত চালকদের নতুন লাইসেন্সের আবেদন পড়েছে ৪১০টি। এ ক’দিনে নবায়ন হয়েছে ১৯৫টি লাইসেন্স। শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের আবেদন পড়েছে ৩৯৫টি। এছাড়া ১৫৮টি যানবাহনের ফিটনেস সনদ দেয়া হয়েছে।

Advertisement

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/পিআর