সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে আসা ভারতীয় গরু বিজিবি দ্বারা আটকের পর সরকারি নিয়মে নিলাম না করে গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ভুরুঙ্গামারী শুল্কগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাতানো নিলামে কমদামে এসব গরু বিক্রি করায় এ খাত থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
Advertisement
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর বিভিন্ন সীমান্ত পথে করিডোর বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি। এরপরও চোরাকারবারীরা উপজেলার ধলডাঙ্গা, ময়দান, শালঝোড়, বহলকুড়ি সীমান্ত দিয়ে শতশত ভারতীয় গরু অবৈধভাবে পাচার করে বাংলাদেশে আনছে।
সারা বছর গরু আসলেও ঈদকে সামনে রেখে চোরাকারবারীরা আরও তৎপর হয়ে উঠে। এদিকে সীমান্তে বিজিবির টহলদল প্রায়ই এসব অবৈধ ভারতীয় গরু আটক করছে।
এদিকে বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় ৯টি গরু নিলাম দেয়া হয় দিয়াডাঙ্গা কোম্পানি সদরের সামনে। যার সিজার মূল্য ধরা হয় ৫ লাখ ২০ হাজার। অথচ নিলাম হয় দুই লাখ ৬০ হাজার ২৯৫ টাকায়। গরুর ক্রেতা ছিলেন পফিকুল ইসলাম।
Advertisement
কিন্তু ব্যবসায়ীরা জানান, এ গরুগুলোর মূল্য অনেক বেশি ছিল এবং বেশি দামে নিলাম করা যেত। কিন্তু উপস্থিত একটি সিন্ডিকেট কমদামে নিলাম দেখিয়ে আর্থিক সুবিধা নেয় এখান থেকে। বিজিবিও সেখান থেকে গরু প্রতি টাকা নেয়। গত ৬ এপ্রিল সোমবার বেলা ১১টায় সরকারি নিলাম নিয়ম না মেনে প্রচারণা ও জামানত ছাড়াই দিয়াডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পে সিন্ডিকেট নিলামে ১৯টি গরুর মধ্যে ৯টি বড় গরু দুই লাখ ৬০ হাজার ২৯৫ টাকায় সিন্ডিকেট নিলামে বিক্রি করা হয় শিলখুড়ির ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ হোসেন বিএসসির কাছে। এর পরপরই আলতাব হোসেন ওই স্থানে হানিফ নামের গরু ব্যবসায়ীর কাছে গরু নয়টি বিক্রি করেন চার লাখ ৫২ হাজার টাকায়।
অথচ শুল্ক কর্মকর্তা ও বিজিবি ইচ্ছে করলে এ দামে গরুগুলো নিলাম করতে পারতো। সরকারের রাজস্ব বাড়তো। কিন্তু সিন্ডিকেট নিলামের কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিলামের বাইরে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানান, ওইদিন ২৩টি গরু আটক করে বিজিবি। কিন্তু শুল্ক গুদামে জমা করা হয় ১৯টি। বাকি চারটি গরুর হিসেব নেই। প্রায় এ রকম ঘটনা ঘটে বলে জানান তারা। গত ৫ আগস্ট বিকেলে ধলডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পে সাতটি মাঝারি আকারের গরু নিলামে ভ্যাটসহ ৩ লাখ ১১ হাজার টাকায় বিক্রয় করা হয়। এর আগে ৩ আগস্ট বাগভান্ডার বিজিবি ক্যাম্পে ছয়টি বড় গরু নিলামে বিক্রি করা হয় মাত্র এক লাখ ২৭ হাজার টাকায়। এর আগে গত কয়েক দিনে বাগভান্ডার, দিয়াডাঙ্গা ও ধলডাঙ্গার বিজিবি মোট ৩৪টি গরু আটক করে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা। অথচ সিন্ডিকেটে অনেক কম দামে এসব গরু নিলাম করা হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব কমে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জয়মনির হাট কাস্টমস শুল্ক গুদাম কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন বারুরী বলেন, আজকের নিলামে আমি ছিলাম না। আমাদের সুপার ছিল। নিয়ম অনুযায়ীই তো নিলাম করা হয়। তবে সুপার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা অপেন নিলাম দেই। যে বেশি মূল্য দেয় তাকে দেয়া হয়।
Advertisement
দিয়াডাঙ্গা বিজিবি কোম্পানি সদরের কমান্ডার সুবেদার মনচুর আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
নাজমুল/এমএএস/আরআইপি