অর্থনীতি

ধনী-গরিব মিলেই একটা দেশ : আতিউর রহমান

বাংলাদেশ ব্যাংক এখন উন্নয়নমুখি (ডেভেলপমেন্টাল) কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমাদের কাছ থেকে চীন এখন শিখছে, তবে তারা আমাদের মতো এতোটা পথ এগুতে পারেনি। ডেভেলপমেন্টাল সেন্ট্রাল ব্যাংক ধারণাটাই নতুন। বাংলাদেশের কাছ থেকেই সবাই শিখছে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশ্বের কাছে পথ প্রদর্শক। আমি গরিবের অর্থনীতিবিদ এবং গরিবের গভর্নর। গভর্নর হতে গিয়ে আমি ধনীদের আক্রান্ত করিনি। কারণ আমি নিজেও জানি, ধনী এবং গরিব মিলেই একটা দেশ। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এনআরবি’র আয়োজনে ‘ওর্য়াল্ড কনফারেন্সে’ বাংলাদেশ ব্যাংক এর গর্ভনর ড. আতিউর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে বেশ ভালো করছি, গত বছর আমরা ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মতো রেমিটেন্স বাড়াতে পেরেছি। ১৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে, যা আমাদের মতো দেশের জন্য রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স। গত ৬ বছরে রেমিটেন্স-প্রবাহ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এর আরেকটি দিক হলো, রফতানি। তিনি আরো বলেন, গতবছর মূলত রাজনৈতিক কারণে তিন মাসের মতো আমাদের অর্থনীতি একদম স্থবির হয়ে পড়েছিল। সহিংসতার কারণে বিদেশিরা আসার সাহস পাচ্ছিলো না, অনেক রফতানি অর্ডার বাতিল হয়েছিল। ফলে রফতানিতে এক সময় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিও দেখা যাচ্ছিলো। বছর শেষে রফতানি আগের বছরের চেয়ে কম হয় কি-না, এমন ভয় আমরাও পেয়েছিলাম। সেখান থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৪ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগামী বছর ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আশা করছি। তবে সুখের কথা হলো, আমদানি বাড়ছে। আমদানির ৬৫ শতাংশই মূলত মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পের মধ্যবর্তী কাঁচামাল। তাতে আগামী দিনের জন্য আমাদের রফতানি সক্ষমতা বাড়ছে। তবে যেহেতু আমদানিতে প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশ আর রফতানিতে ৪ শতাংশের মতো, তাতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ভারসাম্যে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এটা নিয়ে আমি এতোটা উদ্বিগ্ন না। কারণ, এটা আমাদের ভবিষ্যৎ সক্ষমতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি আমাদের চেয়েও বেশি। সাত মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা আমাদের রয়েছে, তাই আমরা ঘাটতি সত্ত্বেও স্বস্তিতে রয়েছি।  শুক্রবার রাতে রাজধানী কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাং এর হোটেল ফুরামায় ‘ওর্য়াল্ড কনফারেন্স সিরিজ-২০১৫’ অনুষ্ঠিত হয়। এম এস সেকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে ‘ওর্য়াল্ড কনফারেন্স’ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনার  মো. শহিদুল ইসলাম। প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ, মালয়েশিয়া চেম্বারের  সভাপতি নাসির এ চৌধুরী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে উপ মহা-ব্যবস্থাপক আশরাফুল আলম। এতে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসী ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, কূটনৈতিক এবং ব্যাংকারসহ বিভিন্ন পেশার প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন।এসএইচএস/আরআইপি

Advertisement