জাতীয়

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু বুধবার

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামীকাল (৮ আগস্ট) বুধবার থেকে। বুধবার মিলবে ১৭ আগস্টের টিকিট। আর ফিরতি টিকিট বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে ১৫ আগস্ট থেকে।

Advertisement

প্রতিবারের মতো এবারও দশ দিন আগে থেকে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ৯ আগস্ট বিক্রি হবে ১৮ আগস্টের টিকিট। এভাবে ১০, ১১ ও ১২ আগস্টে পর্যায়ক্রমে টিকিট মিলবে ১৯, ২০ এবং ২১ আগস্টের টিকিট। এই দিনগুলোতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ঢাকা স্টেশনে ২৬টি কাউন্টার খোলা রাখা হবে। এর মধ্যে ২টি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

একইভাবে ১৫ আগস্ট থেকে ঈদ ফেরত যাত্রীদের জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ঈদ ফেরত অগ্রিম টিকিট রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ফিরতি টিকিট ১৫ আগস্টে পাওয়া যাবে ২৪ আগস্টের টিকিট। একইভাবে ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ আগস্টে যথাক্রমে পাওয়া যাবে ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ আগস্টের টিকিট।

এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত রোববার (৫ আগস্ট) বাসের অগ্রিম টিকিট শুরু করার কথা থাকলেও আজ মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে রাজধানীর কল্যাণপুর ও আন্তজেলা বাস টার্মিনাল গাবতলীতে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।

Advertisement

ঈদযাত্রায় ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন

ঈদযাত্রায় ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। সেগুলো হলো দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল : ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ- ঢাকা (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট এই ৪ দিন এবং পরে ২৩ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট ৭ দিন)।

চাঁদপুর স্পেশাল ১ : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট ৪ দিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট ৭ দিন)।

চাঁদপুর স্পেশাল ২ : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট ৪ দিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট ৭ দিন)।

Advertisement

রাজশাহী স্পেশাল : রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী (ঈদের আগে ১৮, ১৯ ও ২০ আগস্ট ৩ দিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট ৭ দিন)।

দিনাজপুর স্পেশাল : দিনাজপুর-ঢাকা-দিনাজপুর (ঈদের আগে ১৮, ১৯ ও ২০ আগস্ট ৩ দিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট ৭ দিন)।

লালমনিরহাট স্পেশাল : ঢাকা-লালমনিরহাট-ঢাকা (ঈদের আগে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ আগস্ট ৪ দিন এবং ঈদের পরে ২৪ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট ৭ দিন)।

খুলনা এক্সপ্রেস : খুলনা-ঢাকা-খুলনা (ঈদের আগে ২১ আগস্ট একদিন চলবে)।

শোলাকিয়া স্পেশাল-১ : ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে ঈদের দিন চলাচল করবে।

শোলাকিয়া স্পেশাল-২ : ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে ঈদের দিন চলবে।

বাংলাদেশ রেলওয়েতে প্রতিদিন ২ লাখ ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করে। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে দৈনিক ৩ লাখ যাত্রী চলাচল করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। সেইসঙ্গে সুষ্ঠ ও নিরাপদে ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হবে।

এদিকে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে যেন ঈদযাত্রা করতে পারে, সেই লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ

ঢাকা, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর এবং খুলনাসহ সকল বড় বড় স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র‌্যাবের সহযোগিতায় টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

নাশকতা প্রতিরোধ

চলন্ত ট্রেনে, স্টেশনে বা রেল লাইনে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধকল্পে আরএনবি, জিআরপি ও রেলওয়ে কর্মচারীদের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। ঈদের ৫ দিন পূর্ব থেকে ট্র্যাক পেট্রোলিং করা হবে। এছাড়া র‌্যাব, বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতায় নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।

কোচ সংযোজন

ঈদুল আজহা উপলক্ষে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৭৫টি এমজি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৭৫টি (২২টি এমজি ও ৫৩টি বিজি) সহ মোট ১৫০টি কোচ শপ আউট-টার্ন হবে। বর্তমান বিদ্যমান কোচের সংখ্যা ১২৫টি। ১৫০টি আউট টার্নসহ ঈদুল আজহা উপলক্ষে সর্বমোট ১৪০২টি কোচ চলাচল করবে।

লোকোমোটিভ সরবরাহ

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিদ্যমান পূর্বাঞ্চলে ১০৪টির সঙ্গে ১০টি লোকোমোটিভ (বিদ্যমান ১০৪+১০=১১৪টি) ও পশ্চিমাঞ্চলে ১০৫টির সঙ্গে ১০টি (বিদ্যমান ১০৫+১০=১১৫টি) সহ সর্বমোট ২২৯ লোকোমোটিভ ব্যবহার করা হবে।

এছাড়াও অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে আছে- যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের তিন পূর্ব থেকে কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া কোনো মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে না।

ঈদুল আজহার দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কতিপয় মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না। টিকিটধারী যাত্রীদের ভ্রমণের সুবিধার্থে জয়দেবপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ঢাকাগামী আন্তঃজোনাল ও আন্তঃনগর ট্রেনে কোনো আসনবিহীন যাত্রী চলাচল করতে পারবে না।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সুষ্ঠ ও নিরাপদে ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রেন পরিচালনায় সাথে সম্পৃক্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হবে। ২১, ২২ আগস্ট মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং ২৩ আগস্ট বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল করবে না।

একজন যাত্রীকে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টির বেশি টিকিট দেয়া হবে না এবং বিক্রিত টিকিট ফেরত নেয়া হবে না। ঢাকা স্টেশনে ২৬টি কাউন্টার খোলা রাখা হবে। এর মধ্যে ২টি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার ৫ দিন আগে ১৮ আগস্ট থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলাচল করবে।

এএস/এসআর/আরআইপি