আন্তর্জাতিক

পেপসির প্রধান নির্বাহীর পদত্যাগ

ব্যবসায়িক দুনিয়ায় ইন্দ্রা নুয়ি খুবই বিরল একটি উদাহরণ। একজন অভিবাসী এবং একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও তিনি গত ১২ বছর ধরে পেপসির প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করেছেন। এই কাজের সুবাদেই তিনি ঠাঁই করে নিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান কর্পোরেট ব্যক্তিত্বদের তালিকায়।

Advertisement

২০০৬ সাল থেকে পেপসিকোর প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ শুরু করলেও প্রতিষ্ঠানটিতে তিনি ২৪ বছর ধরে যুক্ত রয়েছেন। সোমবার তিনি এই পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

তবে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের নেতৃত্বে থাকবেন ৬২ বছর বয়সী ইন্দ্রা নুয়ি। পেপসির অবিশ্বাস্য অগ্রগতির পেছনে তাকেই মূল কারণ বলে মনে করেন অনেকে।

ইন্দ্রা নুয়ির আমলে ১২ বছরে পেপসির বিক্রি বেড়েছে ৮০ শতাংশ। প্রধান নির্বাহী হওয়ার আগে তিনি পেপসির অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। তার পরিবর্তে পেপসির পরবর্তী প্রধান নির্বাহী হচ্ছেন রামোন ল্যানগুর্তা।

Advertisement

ইন্দ্রা নুয়ি বলেন, পেপসির সঙ্গে এতদিন ধরে কাজ করাটা সত্যিই সৌভাগ্যের বিষয়। আমাকে এই পদের যোগ্য বলে মনে করায় তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। রামোনকে শুভেচ্ছা জানাই যেন তিনি পেপসিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।

ইন্দ্রা নুয়ির জন্ম ভারতের চেন্নাইয়ে। ১৯৭৮ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি ইয়েলে স্কুল অব ম্যানেজমেন্টে ভর্তি হন। সেখানকার পড়াশোনা শেষে মটোরোলাসহ বিভিন্ন নামী কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর ১৯৯৪ সালে পেপসিতে যোগ দেন ইন্দ্রা নুয়ি।

২০০১ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে নির্বাচিত হন প্রধান নির্বাহী। নুয়ি যখন পেপসিতে প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন, তখন বিশ্বে একাধারে চলছে অর্থনৈতিক মন্দা, সেই সঙ্গে চিনিমুক্ত সোডা জাতীয় পানীয়ের পক্ষে তুমুল প্রচারণাও ছিল। ফলে এক সময় প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবসা সম্প্রসারণে বাধ্য হয়।

এছাড়া পেপসির বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছিলেন পরিবেশ বিষয়ক কয়েকজন আন্দোলনকারীও। তাদের সামলেও প্রতিষ্ঠানটি নুয়ির নেতৃত্বে সামনে এগিয়েছে। তিনি বলেন, আমার মধ্যে অভিবাসীদের যে প্রবণতা তা ভালোভাবেই ছিল। আমার প্রায়ই মনে হতো, আমার চাকরিটা যে কোনো সময় চলে যেতে পারে এবং আমার শূন্যস্থান অন্য কেউ পূরণ করে ফেলবে।

Advertisement

২০০৬ সালে তিনি প্রধান নির্বাহী হিসেবে যোগ দেয়ার পর পেপসির আয় বছরে সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি ডলারের ওপরে।

টিটিএন/এমএস