খেলাধুলা

শেষ ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নাকি সৌম্যর পরিবর্তে মোসাদ্দেক!

প্রথম ম্যাচের দল পাল্টে যে একাদশকে খেলানো হলো দ্বিতীয় ম্যাচে, সেই দল মাঠ ছাড়লো বিজয়ীর বেশে। ফ্লোরিডায় রোববার কাকডাকা ভোরে যে লাল সবুজ পতাকা উড়লো, তা উড্ডীয়মান থাকলো শেষ পর্যন্ত।

Advertisement

অফ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের বদলে খেলতে নেমে দারুণ বল করলেন তরুণ বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দার রনি। বোলিংয়ের উদ্বোধন করে ক্যারিবীয় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ইচ্ছেমত এদিক ওদিক আক্রমনাত্মক শটস খেলতে না দিয়ে একদম ঠান্ডা রাখলেন রনি। পকেটে উইকেট জমা করতে না পারলেও চার ওভারের স্পেলে মাত্র ২৬ রান দিয়ে নিজের অন্তর্ভুক্তির যথার্থতার প্রমাণ দিয়েছেন এ তরুণ।

আবু হায়দার রনি একা নন। রোববারের ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে ভাল বোলিং করা তিন বোলারই বাঁ-হাতি; অধিনায়ক সাকিব (৪ ওভারে ১৯ রানে ২ উইকেট), মোস্তাফিজ (৪ ওভারে ৩/৫০), নাজমুল অপু (৪ ওভারে ৩/২৮)। অধিনায়ক সাকিব আর কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ অটেমেটিক চয়েজ। এমন মাপা বোলিংয়ের পর নাজমুল অপু আর আবু হায়দার রনির বাদ পড়ার প্রশ্নই আসে না।

মোটকথা, ধরেই নেয়া যায় বোলিং ডিপার্টমেন্টে কোনই রদবদল ঘটছে না। তাহলে কি শেষ ম্যাচে একাদশ অপরিবর্তিত থাকবে? রোববার যে দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে ৬ আগস্ট (সোমবার) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ফ্লোরিডায় সাকিবের নেতৃত্বে কি সেই দলই খেলতে নামবে? না কোন পরিবর্তন ঘটবে?

Advertisement

মূলতঃ ‘উইনিং কম্বিনেশন’, ধরে রাখা ক্রিকেটের অনেক পুরনো রীতির একটি। সাধারণতঃ ইনজুরি গ্রাস না করলে আগের ম্যাচ জেতা দলের কাউকে বাদ দেয়ার নজির খুবই কম। তবে সেটাই যে স্বতঃসিদ্ধ, তাও নয়। আসলে পরিবেশ-প্রেক্ষাপট, প্রতিপক্ষের লাইনআপ, শক্তি-সামর্থ্য এবং উইকেটের চরিত্রের কথা মাথায় রেখেই দল সাজানো হয়।

তাতে যদি আগের ম্যাচ জেতা দলে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে রদবদল ঘটে। এর বাইরে কেউ হঠাৎ ইনজুরিতে আক্রান্ত হলে কিংবা ক্রমাগত খারাপ খেলতে থাকলেও উইনিং কম্বিনেশন ভেঙ্গে দলে পরিবর্তন আনা হয়। আশার কথা, এ মুহূর্তে মানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলে কোন ইনজুরি নেই। তাই সাধারণ ও স্বাভাবিক হিসেবে দলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম।

তবে একটি পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে। প্রথম দুই ম্যাচে সুবিধা করতে না পারা ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের (০+১৪) পারফরমেন্স প্রত্যাশিত মানে পৌঁছেনি। দলে তার অবদান সামান্যই। তারচেয়ে বড় কথা, সৌম্যর ফর্ম ভাল যাচ্ছে না। তার ব্যাটের স্বাভাবিক ছন্দ ও লয় নেই। রান খরায় ভোগার পাশাপাশি তেড়েফুঁড়ে আক্রমণাত্মক শটস খেলাও যেন ভুলে গেছেন।

তাই টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায় বিকল্প চিন্তাও এসেছে, ‘আচ্ছা একটি ম্যাচে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে চেষ্টা করিয়ে দেখলে কেমন হয়? সৌম্য তো কেমন যেন আড়ষ্ট, জবুথবু। তারচেয়ে মোসাদ্দেক সৈকত খেললে কেমন হবে?’

Advertisement

এমন চিন্তা-ভাবনা কিন্তু চলছে। কোচ স্টিভ রোডস আর অধিনায়ক সাকিবের সে চিন্তা-ভাবনার কথা প্রতিধ্বনিত হলো প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর মুখে। আজ রাতে জাগো নিউজের সাথে আলাপে নান্নু জানালেন, সৌম্যকে নিয়ে একটু অন্যরকম চিন্তা-ভাবনা চলছে। তাকে রেখে, মানে উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখার পাশাপাশি বিকল্প চিন্তাও ঢুকেছে। সেটা যে হবেই, সৌম্য ড্রপ, তার বদলে মোসাদ্দেক ঢুকবেনই এমন কথা অবশ্য জোর দিয়ে বলেননি প্রধান নির্বাচক।

বোঝাই গেল, সেটা আজ বাংলাদেশ সময় রাত দশটার পর টিম মিটিংয়ে কিংবা কাল সকালে মাঠে গিয়ে ঠিক করা হবে। সৌম্যকে তিন ম্যাচ পুরো খেলানো, নাকি মোসাদ্দেক সৈকতকে একটিবার সুযোগ দিয়ে দেখা- অনিশ্চয়তার দোলাচলে টিম ম্যানেজমেন্ট। এ দুয়ের কোনোটা শেষ পর্যন্ত বাস্তব রূপ পায়- তা জানতে সোমবার কাক ডাকা ভোর পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবে হচ্ছে।

সুতরাং সোমবার শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের সম্ভাব্য স্কোয়াডতামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার/মোসাদ্দেক সৈকত, মুশফিকুর রহীম, সাকিব-আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল ইসলাম, নাজমুল অপু, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন এবং আবু হায়দার রনি।

এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম