প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। দেশের প্রত্যেক ঘরে আলো জ্বালাবো। এই লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাই প্রত্যেকে শিক্ষিত হোক। রোববার দুপুরে নির্মাণ সমাপ্ত ৮টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ২টি নবনির্মিত গ্রিড উপকেন্দ্র ও ২১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করে উপকার ভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
Advertisement
দেশের প্রত্যেক এলাকা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩২০০ থেকে ১৮ হাজার ৯শ’ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছে।
তিনি বলেন, আমরা ১২২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছি এবং ১৪ হাজার ১৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রর নির্মাণ কাজ চলছে। এছাড়াও আমরা ভারত থেকে ছয়শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করেছি এবং এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপাল ও ভুটান থেকে হাইড্রো ইলেক্ট্রিসিটি ক্রয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। দেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরকার পারমাণবিক বিদ্যুতের মতো বহুমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। জনগণ এ থেকে উপকৃত হচ্ছে।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী নতুন যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন সেগুলো হলো- ঘোড়াশালের কোড্ডায় ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট সমন্বিত বিদ্যুৎকেন্দ্র, গাজীপুর ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, দাউদকান্দি ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, ফেঞ্চুগঞ্জ ২০০ মেগাওয়াট সমন্বিত বিদ্যুৎকেন্দ্র, নোয়াপাড়া ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, মুন্সিগঞ্জের কমলাঘাটে মুন্সিগঞ্জ ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সিদ্দিরগঞ্জে ৩৩৫ মেগাওয়াট সমন্বিত বিদ্যুৎকেন্দ্র (গ্যাস টারবাইন) ও সিদ্দিরগঞ্জ ২২৫ সমন্বিত বিদ্যুৎকেন্দ্র (দ্বিতীয় ইউনিট)।
শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছে এমন ২১টি উপজেলা হচ্ছে : মৌলভীবাজার সদর, গাইবান্ধার সাখাটা, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, নরসিংদীর মনোহরদী, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও কালাই, নওগাঁর পোরশা, রাজশাহীর মোহনপুর ও দুর্গাপুর, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ, ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও সোনাগাজী, চট্টগ্রামের পটিয়া ও হাটাহাজারী, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এবং হবিগঞ্জ সদর উপজেলা।
দুটি গ্রিড সাবস্টেশন হলো নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় ৪০০/২০০ কেভি গ্রিড সাবস্টেশন ও খাগড়াছড়ি ১৩২/৩৩ কেডি গ্রিড সাবস্টেশন।
প্রধানমন্ত্রী পরে কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার ও খাগড়াছড়ির উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অর্জন ও পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এমআরএম/আরআইপি