সেন্ট কিটসের মত যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়ও খেলা শুরু কাকডাকা ভোরে। আগামীকাল (রোববার) ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সময় ভোর ছয়টায় মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।
Advertisement
ক্যারিবীয়রা প্রথম ম্যাচ জিতে ১-০'তে এগিয়ে। ব্রেথওয়েট বাহিনীর জন্য কালকের ম্যাচ তাই সিরিজ নির্ধারনী। এ ম্যাচ জিতে গেলে এক খেলা বাকি থাকতেই সিরিজ হয়ে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বাংলাদেশের জন্য এটা টিকে থাকার লড়াই। সিরিজ জয়ের স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে এ ম্যাচ জেতা ছাড়া পথ নেই সাকিব বাহিনীর। হারলেই সিরিজ হাতছাড়া।
খুব স্বাভাবিকভাবে সাকিব বাহিনী ঘুরে দাড়াতে প্রানপণ লড়বে। অধিনায়ক সাকিব বলেই দিয়েছেন, তারা প্রথম ম্যাচে রান করতে পারেননি। ভুল ত্রুটি কাটিয়ে স্কোরবোর্ডটাকে যতটা সম্ভব মোটাতাজা করার দৃঢ় সংকল্প টাইগার অধিনায়কের চোখে মুখে।
বাংলাদেশ দল আসলে কি সমীকরণ সামনে রেখে মাঠে নামবে? তাদের কৌশল কি হবে? কেমন টিম কম্বিনেশন হবে, ক'জন জেনুইন ব্যাটসম্যান খেলানো হবে? একাদশে পেসার থাকবেন কয়জন, স্পিনার কোটায় খেলানো হবে কাকে কাকে?
Advertisement
সাধারন দর্শক, অনুরাগী, ভক্ত ও সমর্থকদের এসব কৌতুহলী প্রশ্নের জবাব মেলে মিডিয়ায়। কিন্তু গোল বেধেছে টাইমিং। খেলা শুরু হচ্ছে ভোরের সূর্য উঠতে না উঠতেই। তখন দৈনিক পত্রিকা হাতে পৌঁছেনা। ওদিকে খেলার আগের দিন মানে বাংলাদেশ সময় রাত দশটার দিকে হচ্ছে ম্যাচের আগের শেষ প্র্যাকটিস সেশন।
তারপরে মিডিয়া সেশন হচ্ছে, ক্যাপ্টেন সাকিব বা তামিমের মত সিনিয়র ক্রিকেটাররা কথা বলছেন। একাদশ সাজানোও হচ্ছে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার পর ১১টা নাগাদ। খুব স্বাভাবিকভাবেই তা সাধারন দর্শক, ভক্ত ও সমর্থকদের কাছে সরবরাহ করা কঠিন। এদিকে বিপাকে ঢাকায় অবস্থানরত প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার। তারা কোচ স্টিভ রোডস তাদের সাথে কথা বলেন। তাদের মতামত দেন ও নেন।
তারপর একাদশ চূড়ান্ত হয়। কিন্তু ঐ প্রক্রিয়া এমন এক সময় হয়, বাংলাদেশে যার আগেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি শেষ। পত্রিকা ছাপাও হয়ে যায়। সেজন্যই টিম কম্বিনেশন ও একাদশ সম্পর্কে পরিষ্কার ও স্বচছ ধারণা দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। প্রথম ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জাগো নিউজকে জানিয়েছিলেন দল চুড়ান্ত হবে রাত দশটার টিম মিটিংয়ের পর।
আজও (শনিবার) একই সময়ে জাগো নিউজের মুঠোফোন প্রধান নির্বাচকের কাছে। নান্নুর জবাব, 'আজও একই অবস্থা। বাংলাদেশ সময় রাত দশটার পর টিম মিটিংয়ে একাদশ সাজানো হবে। তবে একটা আভাস মিলেছে, দলে মোটেও বড় সড় রদবদলের সম্ভাবনা নেই। একটা পরিবর্তনের ইংগিত পেয়েছি। তিন স্পিনার থেকে একজন কমিয়ে দুই স্পিনার নিয়ে মাঠে নামার চিন্তা ভাবনা চলছে।'
Advertisement
বলার অপেক্ষা রাখেনা প্রথম ম্যাচে স্পিনার কোটায় অধিনায়ক সাকিবের সাথে খেলেছেন বাঁহাতি নাজমুল অপু ও অফব্রেক বোলার মেহেদি হাসান মিরাজ। একজন কমিয়ে আনলে বাদ যাবেন কে? প্রধান নির্বাচকের ছোট্ট জবাব, 'মিরাজকে বাইরে রাখার চিন্তা ভাবনা চলছে। তার জায়গায় বাড়তি পেসার অন্তর্ভুক্তির কথাই আলোচনা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেনের সাথে আবু হায়দার রনির খেলার সম্ভাবনাই বেশী।’
প্রধান নির্বাচকের এ কথার অর্থ, যেহেতু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আছেন, তাই মিরাজকে বাইরে নিয়ে দুই বাঁহাতি সাকিব-নাজমুল অপুকে দিয়ে স্পিনার ডিপার্টমেন্ট সাজানোর কথাই ভাবা হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে আর কোন রদবদল ঘটবেনা। যদিও কেউ কেউ সৌম্য সরকারকে বাইরে রাখার দাবিতে সোচ্চার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমত হৈচৈ।
কিন্তু যেহেতু সৌম্য প্রথম ম্যাচে উইকেটে এসেই পত্রপাট বিদায় মানে প্রথম বলেই আউট হয়ে ফিরে গেছেন, তাই তাকে এখনই বাদ না দিয়ে ক্রিকেটীয় যুক্তি মেনে অন্তত আরও এক ম্যাচ সুযোগ দেয়ার চিন্তাই চলছে।
আর সৌম্য টিকে যাবার অর্থ ব্যাটসম্যান কোটায় বাকি ছয়জন তামিম, লিটন, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ও আরিফুলের থেকে যাওয়া। তার মানে আগের ম্যাচ খেলা সাত ব্যাটসম্যানই থাকছেন। ওদিকে দুই পেসার মোস্তাফিজ-রুবেলের কাউকে বাদ দেয়াও কঠিন। তাই মিরাজকে বাইরে রেখে একজন থার্ড সিমারের (আবু হায়দার রনি) অন্তর্ভুক্তির জোর চিন্তাই চলছে।
ধারণা করা হচ্ছে ফ্লোরিডার যে মাঠে খেলা হবে, সেই লডার হিলের উইকেট একটু পেসারদের পক্ষে। তাই হয়ত অমন ভেবেই একাদশ সাজানোর চিন্তা। আর যদি আজ রাতে প্র্যাকটিস দেখে ও টিম মিটিংয়ে একাদশে রদবদল ঘটে, তাহলে ভিন্ন কথা।
তবে প্রধান নির্বাচক নান্নুর আগাম জানানো খবর যদি সত্য হয় তাহলে একাদশ দাড়াবে এমন : তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাশ, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক, নাজমুল ইসলাম অপু, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, আবু হায়দার রনি/মেহেদি হাসান মিরাজ।
এআরবি/এসএএস/জেআইএম