দোয়া বা আল্লাহর কাছে ধরনা দেয়াও ইবাদত। আর আল্লাহর কাছে ধরনা দিতে হলে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক প্রর্থনা জরুরি। এ দোয়া বা ধরনা দেয়ার রয়েছে কিছু নিয়ম ও শর্ত। কারণ সঠিক পন্থায় দোয়া না করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মানুষে কোনো মাধ্যম ছাড়াই রহমত বরকত মাগফেরাত দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী তাকে ডাকলেই আল্লাহ তাআলা বান্দাকে সব কল্যাণ দান করবেন।
তবে আল্লাহ তাআলাকে ডাকতে, তাঁর কাছে কোনো কিছু চাইতে কিংবা তার কাছে কোনো কল্যাণ বা নেয়ামত পেতে হলে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। যা আহ্বানকারী বা প্রার্থনাকারীর জন্য আবশ্যক। হাদিসে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ক্ষেত্রে ২টি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তাহলো-
০ হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘মুসলমান যখন অন্য কোনো মুসলমানের জন্য দোয়া করে, যার মধ্যে কোনোরূপ গোনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা থাকে না; আল্লাহ তাআলা এ দোয়ার বিনিময়ে তাকে ৩টির যে কোনো একটি দান করে থাকেন-- তার দোয়া দ্রুত কবুল করে থাকেন;- তার প্রতিদান আখেরাতে দেয়ার জন্য রেখে দিন; কিংবা- তার থেকে অনুরূপ আরেকটি কষ্ট দূর করে দেন।(প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর) এ কথা শুনে সাহাবাগণ বললেন, তাহলে আমরা বেশি বেশি দোয়া করব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ আরও বেশি দোয়া কবুলকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত)
Advertisement
আরও পড়ুন > চরম বিপদেও যেভাবে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবেন
এ হাদিসে বর্ণিত উল্লেখিত শর্তসমূহের সঙ্গে অন্য হাদিসে বর্ণিত ৩টি শর্থ রয়েছে। যা শুধু দোয়া কবুল নয় বরং সব ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত করা হয়েছে। তাহলো-- দোয়াকারীর খাদ্য, পানীয় ও পোশাক পবিত্র হতে হবে। (অর্থাৎ হারাম অর্থ ব্যয়ে না হওয়া)- দোয়া কবুল হওয়ার জন্য ব্যস্ত না হওয়া।- দোয়ার সময় উদাসিন বা বেখেয়াল না হওয়া এবং দোয়া কবুলের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী হওয়া।’ (মুসনাদে আহমাদ, মুসলিম, মিশকাত ও তিরমিজি)
মনে রাখা জরুরিআল্লাহর কাছে দোয়া করতে বা ধরনা দিতে কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না বরং নিজের অন্যায় বা গোনাহের জন্য নিজেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। যে ব্যক্তি ক্ষমার মানসিকতা নিয়ে আল্লাহকে ডাকবে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে রহমত দ্বারা প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন। এমনটিই আল্লাহ তাআলার ঘোষণা।
সুতরাং উল্লেখিত হাদিসের শর্তানুযায়ী আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রেখে, ধিরস্থিরভাবে হালাল খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে দোয়া করা জরুরি।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মহেকে কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী হাদিসের ওপর আমল সাপেক্ষে আল্লাহর কাছে যথাযথভাবে ধরনা দেয়ার মাধ্যমে নিজেদের প্রয়োজন পূরণে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম