দেশজুড়ে

নিরাপত্তার অজুহাতে সড়কে বিচ্ছিন্ন চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে নগরের গণপরিবহন ও দূরপাল্লার গাড়ি বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। ধর্মঘট নিয়ে কোনো বক্তব্য না থাকলেও বাস চলাচল বন্ধে অজুহাত দেয়া হচ্ছে পরিবহন শ্রমিকদের ‘নিরাপত্তা’।

Advertisement

ঢাকায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের গাড়ির লাইসেন্স তল্লাশির মুখে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) বিকেল থেকেই চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল কমে যায়। শুক্রবার সকাল থেকে বাস চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তৃতীয় দিনের মতো আজও (শনিবার) নিরাপত্তার অজুহাতে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল।

শনিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন রুটে গণপরিবহন নেই বললেই চলে। রাতে ও ভোরে চট্টগ্রাম থেকে কিছু দূরপাল্লার গাড়ি ছেড়ে গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে গেছে সে সংখ্যাও। শহরতলীর বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাড়ি না পেয়ে রাস্তায় নাকাল হতে হচ্ছে বিভিন্ন রুটের যাত্রীরাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকে সিনেমা প্যালেস ও অলঙ্কার মোড় থেকে ঢাকামুখী দুয়েকটি বাস ছেড়ে যায়। অক্সিজেন এলাকা থেকে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটির উদ্দেশে কিছু কিছু বাস ছাড়লেও তা অন্যদিনের তুলনায় অনেক কম। প্রায় বন্ধ রয়েছে, শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে কক্সবাজার ও বান্দরবানমুখী বাস চলাচল।

Advertisement

নগরীর অলঙ্কার মোড়, সিনেমা প্যালেস, দামপাড়া, অক্সিজেন, কদমতলী, শাহ আমানত সেতু এলাকায় স্ট্যান্ড-টার্মিনালগুলোতে দূরপাল্লার বাসগুলোকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও নেই চালক ও হেলপাররা। তবে স্বাভাবিক আছে পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল।

অক্সিজেন এলাকার শান্তি বাস সার্ভিসের কর্মচারী জামাল বলেন, ‘দূরপাল্লার বাস চলাচল এখনো ওই অর্থে শুরু হয়নি। দিনের বেলায় গাড়ি চালাতে পারে না বিধায় রাতে কয়েকটা গাড়ি চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে। গত রাতেও আমাদের গাড়ি চলেছে। এখন চালাতে পারছি না তাই গাড়ি ছাড়া হচ্ছে না।’

এদিকে হঠাৎ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। নগরী ও নগরীর বাইরে চলাচলকারী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে বিভিন্ন গন্তব্যে বেশি ভাড়ায় যাত্রীদের চলাচল করতে দেখা গেছে। অনেকে আবার হেঁটে এবং রিকশায় করে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন। সাধারণ মানুষ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের পর শ্রমিক-মালিকদের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. মুছা বলেন, ‘সড়কে শ্রমিকদের নাজেহাল এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে, তাই চালকরা সড়কে নামতে আগ্রহ পাচ্ছেন না। পরিবহন মালিকরাও ভীত।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক শ্রমিক আমাদের বলেছেন, মালিকের নিষেধ অমান্য করে তারা গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছেন না। তবে এ ব্যাপারে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’

পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী বলেন, শ্রমিকদের বাস না চালানোর কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। বরং শ্রমিকদের বলা হয়েছে জনগণকে জিম্মি না করতে এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো ধরনের সংঘাতে না জড়াতে। তবে শ্রমিকরা ভয়ে গাড়ি চালাতে চাচ্ছে না।

আবু আজাদ/বিএ/পিআর