রাজনীতি

মন্ত্রীর নির্দেশেই গণপরিবহন বন্ধ : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য স্কুল-কলেজে পড়ুয়া কিশোর-কিশোরীদের আমরা অভিনন্দন জানাই। শিক্ষার্থীরা অপশাসন, দুঃশাসন ও অব্যবস্থাপনার অভিঘাত অভূতপূর্ব আন্দোলনে তুলে ধরতে পেরেছে।’

Advertisement

শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘গাড়ির বৈধ ডকুমেন্টস, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ইন্স্যুরেন্সের মতো অতি সাধারণ বিষয়গুলোও সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। রাজপথে ট্রাফিক অব্যবস্থা, শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে যে সততা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রম ছাড়া আর কিছু লাগে না, তা এই শিশু-কিশোররা মাত্র দু’দিন কাজ করে প্রমাণ করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এসব বালক-বালিকারা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে অবৈধ সরকার কোনো কাজই করতে পারে না। একই সঙ্গে এও দেখিয়ে দিয়েছে-সুশাসন ও গণতন্ত্র কায়েম করা গেলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকেও ইতিবাচক পথে পরিচালনা করা যাবে।’

Advertisement

রিজভী বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলোকে অগ্রাহ্য করার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশেই গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন-নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকরা বাস রাস্তায় নামাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আপনারা দেখেছেন-কোমলমতি শিক্ষার্থীরা গাড়ি চলতে বাধার সৃষ্টি করেনি, বরং তারা সুশৃঙ্খলভাবে গাড়ি চলতে সহায়তা করেছে।, তারা গাড়ি ও চালকদের লাইসেন্স আছে কি না সেটি চেক করেছে। আমরা দেখতে পেলাম-মন্ত্রীর গাড়ি চালকের লাইসেন্স নেই, এমপির গাড়ির আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গাড়ির কাগজপত্র নেই, চালকেরও লাইসেন্স নেই। এসব খবর আবার দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। এটা জাতির জন্য কত বড় লজ্জার তাতে অবৈধ সরকারের টনক নড়েনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার শুধু পরিবহন সেক্টরেই ব্যর্থ নয় দেশের সব সেক্টরেও ব্যর্থ, তাই বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের যে পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে তা গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু নিয়ে হাসি-তামাশা ও পরিবহন সেক্টরে অরাজকতা সৃষ্টিকারী নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ নিরাপদ সড়কের গণদাবিকে জনগণ ন্যায্য বলে মনে করে।’

রিজভী বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলার দৃশ্য সংগ্রহের সময় মোহনা টিভির রিপোর্টার মাইনুল হোসেন এবং ক্যামেরাপার্সন হাবিবুর রহমান কবিরের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। এ সময় হামলা করে তাদের ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবিসহ আহতদের সুস্থতা কামনা করছি।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত হোসেন শপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এমএমজেড/পিআর