‘আসো, আমরা সবাই মিলে গানটা গাই।’ এ কথা বলেই দরাজ গলায়- ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান, মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, এ গান ধরলেন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
Advertisement
পুলিশের এই কর্মকর্তার কোমড়ে পিস্তল, হাতে ওয়ারলেস, গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট। অন্য সময় হলে বিক্ষোভ দমনে হয়তো তার অঙ্গুলি হেলনই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন!
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে কৌশল হিসেবেই তিনি বহুল পরিচিত ও জনপ্রিয় গানটি ধরলেন। পুলিশ কর্মকর্তার এ কৌশলে টনিকের মতো কাজ হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এ পুলিশ কর্মকর্তার সাথে বেশ আনন্দেই গানের সুরে সুর মেলায়।
বিমানবন্দর সড়কে সম্প্রতি বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর করুণ মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিন যাবত রাজপথে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। পরিবহন খাতে বিরাজমান বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দাবি দাওয়া আদায়ে কর্মসূচি পালন করছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে তারা ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় নেমে সফলতা দেখাচ্ছে।
Advertisement
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কোথাও কোথাও পুলিশ সদস্যেদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা পুলিশ সদস্যদের শান্ত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত দু’দিন যাবত রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। মন্ত্রী, সচিব, পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবী কেউ বাদ যায়নি। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ধানমন্ডি ইবনে সিনার সামনে জাতীয় পতাকাবাহী একটি দামি গাড়ি আটকায় শিক্ষার্থীরা। তারা গাড়ির ড্রাইভারের কাছে লাইসেন্স দেখতে চায়। ড্রাইভার কাচুমাচু হয়ে জানালো এটা মন্ত্রীর গাড়ি। গাড়ির কাঁচ নামিয়ে উঁকি দিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রী ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গাড়ি থেকে নেমে আসেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা মন্ত্রী কেন ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভারকে গাড়ি ড্রাইভ করতে দিয়েছেন তা জানতে চায়। এ সময় মন্ত্রীকে বিব্রত দেখা যায়। তবে তিনি নানা মিষ্টি কথায় শিক্ষার্থীদের ম্যানেজ করেন।
পরে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছাতা নিয়ে মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে গাড়ি থেকে নামিয়ে আরেকটি গাড়িতে তুলে দেন।
এমইউ/এসএইচএস/পিআর
Advertisement