জাতীয়

যুদ্ধাপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল কুদ্দুসের ৬ মাসের জামিন

একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নোয়াখালীর সুধারামের আব্দুল কুদ্দুসের ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

Advertisement

একই সঙ্গে জামিনের মেয়াদ পূর্ণ হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) একটি বোর্ড বসিয়ে তার স্বাস্থ্যগত তথ্য দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন আদালত।

আব্দুল কুদ্দুসের ক্যান্সার রয়েছে সংক্রান্ত বিষয়ে মেডিকেল প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামির এটাই প্রথম জামিনের আদেশ। এর আগে এ ধরনের মামলায় আর কোনো আসামি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে জামিন পাননি। তবে ট্রাইব্যুনাল থেকে বিচার শুরুর আগে অসুস্থতার বিবেচনায় আব্দুল আলিম ও কায়সার কামাল জামিন পেয়েছিলেন বলে জানান খন্দকার মাহবুব হোসেন।

আদালতে আজ আব্দুল কুদ্দুসের জামিনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও মাসুদ রানা। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির ও ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের রিপোর্টে আব্দুল কুদ্দুসের ক্যান্সার বিষয়টি উল্লেখ থাকায় তা বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত তার এই জামিন মঞ্জুর করেন।’

এর আগে গত ২৯ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল কুদ্দুসকে কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে, ২ আগস্টের মধ্যে ওই হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকদের আব্দুল কুদ্দুসের অসুস্থতা নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী আজ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপর ক্যান্সার রয়েছে বিষয়টি আমলে নিয়ে জামিন আদেশ দিলেন আদালত।

Advertisement

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম জানান, এর আগে এই আসামির আপিল আবেদন করা হয়। আসামির বয়স এবং অসুস্থতা বিবেচনায় আপিলের সঙ্গে তার জামিন আবেদনও করা হয়। এর আগে ট্রাইব্যুনালে দণ্ড পাওয়ার পর আর কোনো আসামির জামিন আবেদন করা হয়নি। এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামির মামলায় আপিল বিভাগে জামিন চাওয়া হয় এবং আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।

আসামির জামিন আবেদনের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ওনার (আসামি) বয়স ৮৭ বছর। চার ধরনের ক্যান্সার, হুইল চেয়ার ও অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে ফিরতে পারেন না। মানবিক কারণে জামিন চাওয়া হয়েছিল।

গত ১৩ মার্চ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আব্দুল কুদ্দুসকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাদের মধ্যে আমির আলী, মো. জয়নাল আবদিন ও আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুরের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে এবং আসামি মো. আব্দুল কুদ্দুসের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়।

এফএইচ/এমবিআর/আরআইপি