জাতীয়

হেলপারদের উসকানিতে বেপরোয়া হয়েছিলেন চালকরা

‘জাবালে নূর’ পরিবহনের তিনটি বাসসহ আরও কয়েকটি অজ্ঞাতনামা বাসের চালকরা হেলপারদের প্রত্যক্ষ উসকানিতে বেপরোয়া ও দ্রুত গতিতে বাস চালিয়ে ছিল। বাসে ওঠার জন্য হোটেল রেডিসনের বিপরীতে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের প্রবেশমুখে রাস্তার পাশে অপেক্ষা করছিল শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

এর মধ্যে জাবালে নূরের (ঢাকা মেট্রো ১১-৯২৯৭) অজ্ঞাতনামা চালক ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর বাস উঠিয়ে দেয়। এতে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল করিম রাজিব ও দিয়া খানম মিম নিহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আরও কয়েকজন।

এ ঘটনায় করা মামলায় মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিয়াদ আহমেদ। প্রতিবেদনে তিনি এসব কথা উল্লেখ্য করেন।

জাগো নিউজকে রিয়াদ আহমেদ বলেন, স্থানীয় তদন্তে আমরা এসব তথ্য পেয়েছি।

Advertisement

গ্রেফতার জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের চালক ও হেলপারকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ্য করেন, প্রতিযোগিতায় লিপ্ত বাসগুলোর মধ্যে চালক-সহযোগী মিলে চারজনের নাম পাওয়া গেছে। র‌্যাবের সহযোগিতায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু জাবালে নূর পরিবহনের মূল ঘাতক বাসের পলাতক চালকসহ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত আরও চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি বাস জব্দ করা হয়েছে। মূল পলাতক আসামি চালককে গ্রেফতার ও মামলার তদন্তের স্বার্থে চারজনকে ১০ দিনের পুলিশি রিমান্ড প্রয়োজন। আসামিরা জামিন গেলে চিরতরে পলাতক হবে। পলাতকদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। বিধায় আসামিদের জেলহাজতে আটক রাখা প্রয়োজন।

মামলার সিডি না থাকায় ঢাকা মহানগর হাকিম এইচএম তোয়াহা তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য ৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

গ্রেফতার চারজন হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের চালক সোহাগ আলী ও জুবায়ের এবং হেলপার এনায়েত হোসেন ও রিপন।

Advertisement

২৯ জুলাই দুপুরে কালশী ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিল। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পেছন থেকে একই পরিবহনের আরেকটি দ্রুতগতি সম্পন্ন বাস ওভারটেক করে সামনে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিমিষেই উঠে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর। চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুজন। এ ছাড়া আহত হন আরও ১৫-২০ শিক্ষার্থী।

ওইদিন রাত ও পরদিন সকালে রাজধানী ঢাকা এবং বরগুনায় অভিযান চালিয়ে এই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার ঘটনাস্থলে জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস ছিল। এর মধ্যে যে বাসটির চাকায় পিষ্ট হয়ে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয় সেই চালককে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। দুর্ঘটনার দিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

জেএ/জেডএ/এমএস