মিরপুর ১১ নম্বরের কালশি হয়ে বিমানবন্দর সড়কে চলাচলকারী সব যান বন্ধ রয়েছে। সকালে কিছু বাস চললেও ভাঙচুরের ভয়ে এই রোডে আপাতত যান চলাচল করছে না। কখন থেকে যান চলাচল আবার শুরু হবে সেটাও কেউ বলতে পারছে না।
Advertisement
রোবরার এই রোডে জাবালে নূর বাসের চাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। সেদিন বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। পরের দিন সোমবার ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। এই অবস্থায় আজ মঙ্গলবার এ রোডে যান চলাচল বন্ধ রেখেছেন গাড়ির মালিকরা। এ রোডে শাহাদত হোসেনের গাড়ি চলাচল করে। তিনি বলেন, প্রজাপতি পরিবহনসহ এ রোডে তার চারটি গাড়ি চলে। কিন্তু জাবালে নূরে আমার কোনো গাড়ি নেই। তারপর আমার দুটি গাড়ি ভেঙে একাকার করা হয়। এ জন্য আজ আর গাড়িই নামাই নাই। কবে ছাড়বো মালিক সমিতি বলতে পারবে।
মঙ্গলবার এ রোডে দেখা গেছে, অনেক মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু কোনো গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছেন।
কথা হয় সৌমিত্র দাসের সঙ্গে। তিনি জানান, অবরোধ নেই। তারপরও গাড়ি কেন রাস্তায় নামেনি। নতুন করে যাত্রীদের হয়রানি করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে গাড়ির মালিক-শ্রমিকরা।
Advertisement
এর আগে নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে সোমবার ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী শাহীন সিফাত সংবাদ সম্মেলন করে এ আলটিমেটাম দেয়।
দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে, নৌ-পরিবহনমন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্প্রিড ব্রেকার দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদের নিতে হবে, শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।
রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে কালশি ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিল। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়। তখন পেছন থেকে আরেকটি দ্রুতগতি সম্পন্ন জাবালে নূরের বাস ওভারটেক করে সামনে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিমিষেই বাসটি ওঠে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর। চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুইজন। এ ছাড়া আহত হয় আরও ১৩ জন শিক্ষার্থী।
নিহত দুজন হলো- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
Advertisement
ওই ঘটনায় রোববার রাতেই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩৩। এ ঘটনায় জাবালে নূরের দুই বাসের দুই চালক ও দুই হেলপারকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
এমএ/জেডএ/এমএস