দেশজুড়ে

বন্যপ্রাণির প্রজননে সুন্দরবনে ৩ মাস নিষিদ্ধ হচ্ছে পর্যটন

সুন্দরবনে বন্যপ্রাণির প্রজনন মৌসুম জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত। তাই এই ৩ মাস ম্যানগ্রোভ এই বনে সব ধরনের পর্যটন নিষিদ্ধ হচ্ছে। এই ৩ মাস সুন্দরবনে ধরনের পর্যটন নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা সহসাই আসছে বলে নিশ্চিত করেছে বন অধিদফতর।

Advertisement

জানা যায়, বন্যপ্রাণির প্রজনন বাধাহীন করতে জুন থেকে আগস্ট প্রজননের মৌসুমে সব ধরনের পর্যটন নিষিদ্ধ করতে বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষকের মাধ্যমে প্রধান বন সংরক্ষকের (সিসিএফ) কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আর বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে পাঠানো প্রস্তাবটি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, সুন্দরবন হচ্ছে দেশের বন্যপ্রাণির বৃহত্তম ভাণ্ডার। বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) এই বনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশ অংশে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল ও মায়া হরিণ, বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ডলফিন, লোনা পানির কুমির, বন্য শুকর ও উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণি।

তিনি আরও জানান, সুন্দরবনে ২০০৪, ২০০৭, ২০১১ ও ২০১৫ সালের জরিপে দেখা গেছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ বন্যপ্রাণির আধিক্য এলাকাগুলোই পর্যটকরা আগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। জুন থেকে আগস্ট এই ৩ মাস সুন্দরবনের টাইগার ও হরিণসহ বন্যপ্রাণির প্রজনন মৌসুম। পর্যটকদের কারণে বন্যপ্রাণির অবাধ বিচরণ ও প্রজননে বাধার সৃষ্টি ফলে বংশ বিস্তারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই অবস্থায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল ও মায়া হরিণসহ বন্যপ্রাণির প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে সকল ধরনের পর্যটন নিষিদ্ধ করার একটি প্রস্তাব খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরীরর কাছে গত মাসে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তনসহ মানবসৃষ্ট দূষণের কারণে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণিকূল সংকটের মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যেই সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে, দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গণ্ডার, এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির ও এক প্রজাতির বন্য মহিষ। তাই পর্যটন নিষিদ্ধের বিষয়ে বন অধিদফতর থেকে সহসাই নির্দেশনা আসবে আশা করছেন এই বন কর্মকর্তা।

শওকত আলী বাবু/আরএ/পিআর