রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা সড়কে যারা নিয়মিত চলাচল করতেন বা এখন করছেন তাদের কাছে প্রতিদিনকার ভোগান্তির কারণ ছিল তীব্র যানজট। দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হতো এই পথ দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে। হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের বাড্ডা প্রান্তের ইউলুপ নির্মাণ কাজের জন্যই মূলত এই রুটের যানজট ছিল এতদিন। একদিকে নির্মাণ কাজের জন্য সরুরাস্তা, অন্যদিকে খানাখন্দে ভরা সড়কে যাতায়াতকারীদের বিড়ম্বনার মাত্রা ছিল অনেক বেশি।
Advertisement
তবে এই বিড়ম্বনা-ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে গতকাল উদ্বোধন করা হয়েছে বাড্ডার নর্থ ইউলুপটি। উদ্বোধনের পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলেও তাৎক্ষণিকভাবে যানচলাচল করতে দেয়া হয় না। পরবর্তীতে উদ্বোধন উপলক্ষে সাজানো গেট আর স্টেজ সরিয়ে নিলে যানচলাচল শুরু হয়।
রোববার ইউলুপটি ঘুরে দেখা গেছে, রামপুরা-মেরুল বাড্ডার দিকে থেকে আসা গাড়ি, সিএনজি, প্রাইভেটকারগুলো ইউলুপ দিয়ে বাঁক নিয়ে বনশ্রী, আফতাবনগর, রামপুরা বা মালিবাগ অভিমুখে সহজেই যাতায়াত করতে পারছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই ইউলুপ দিয়ে পুরোদমে যানচলাচল শুরু হয়েছে। ফলে কমে আসবে যানজট, সেইসঙ্গে যাতায়াতকারীদের মিলবে স্বস্তি।
Advertisement
হাতিরঝিল উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (রাজউক) জামাল আক্তার ভূঁইয়া বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই ইউলুপটি উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধন উপলক্ষে ইউলুপটির মুখে এবং নিচে স্টেজ, গেট থাকার কারণে তাৎক্ষণিক যানচলাচল করেনি কিন্তু পরবর্তীতে এসব সরিয়ে নেয়ার পর যানচলাচল শুরু হয়।
হাতিরঝিল-রামপুরা ব্রিজসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে ইউলুপটি দিয়ে ঘুরে বনশ্রীর দিকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী এহসানুল হক। তিনি বলেন, আগে হাতিরঝিল থেকে বের হয়ে রামপুরা-বনশ্রীর দিকে যেতে সিগন্যালসহ যানজটে পড়তে হতো। কিন্তু আজ প্রথম ইউলুপ দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে আনলাম। এ অবস্থায় যানজটে পড়তে হয়নি। আশা করা যায় আগের মতো এখানে আর যানজটে পড়তে হবে না।
শনিবার বিকেলে ইউলুপটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ইউলুপটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এছাড়া প্রকল্পটির উদ্যোগী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) লিড সংস্থা।
নির্মাণ সহায়তায় ছিল স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (কংক্রিট অংশ)। স্টিল অংশে বিল্ডট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। ফ্লাইয়ার কনসেপ্ট ও ডিজাইনে ছিল টিটিএন ইন্টারন্যাশনাল। এছাড়া প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় ছিলেন হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের সদস্যবৃন্দ।
Advertisement
এএস/বিএ/জেআইএম