দেশজুড়ে

সেলাই মেশিনে ঘোরে জিফোরদের জীবন চাকা

রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার ভূবন জয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জিফোর চাকমা (১৫)। জিফোরের বাড়ি উপজেলার ২নম্বর বনযোগীছড়া ইউনিয়নের ধামাইপাড়া গ্রামে। সাড়ে চার বছর বয়সে বাবা শৈলেন চাকমা তাকে ও তার মা রিতা চাকমাকে ছেড়ে চলে যান। থমকে যায় তাদের জীবন চাকা। তখন থেকে মা রিতা চাকমা ওই গ্রামের বাজারে ছোট একটি দোকানে মেশিনে সেলাই করে জিফোরকে লালন-পালন করছেন।

Advertisement

জিফোরও মায়ের কাছ থেকে শিখেছে সেলায়ের কাজ। এ মেশিনেই চলে মা-ছেলের জীবন। স্কুলের পরে বাকি সময়টা মাকে সহযোগিতা করে জিফোর।

কথা হলে জিফোর জানায়, সে তার মায়ের কাছ থেকে সেলায়ের কাজ শিখেছে। বর্তমানে সে সেলাইয়ের সব কিছুই পারে।

‘আমি অনেক পড়ালেখা করবো। পড়ালেখা করে শিক্ষক হবো। শিক্ষক হয়ে আমার গ্রামের ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা শেখাব।’ জানায় জিফোর।

Advertisement

জিফোরের মা রিতা চাকমা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। জানি না ছেলেকে কতটুকু পড়ালেখা করাতে পারবো? তবে আমার ছেলে পড়ালেখা করতে চায়।

জুরাছড়ি উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক রকি চাকমা জানান, জিফোর পড়ালেখার পর বাকি সময়টা দোকানে বসে সেলায়ের কাজ করে। এমন ছাত্রের পাশে সামাজিকভাবে সকলকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় এ সাংবাদিক।

জিফোরের শিক্ষিকা দিশা চাকমা বলেন, জিফোর অনেক ভালো ছেলে, পড়ালেখায়ও ভালো। সে আমার কাছে প্রাইভেট পড়তো। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে তার মা ছেলেকে প্রাইভেটে পাঠাতে পারছে না।

জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, এ ধরনের শিক্ষার্থীদের পাশে আমরা সবসময় থাকি। আমি জিফোর ও তার মায়ের সঙ্গে দেখা করে তাদেরকে সহযোগিতা করব। আমি তাদের পাশে আছি।

Advertisement

উপজেলার নির্বাহী অফিসার রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন শিক্ষার্থীদের পাশে সবসময় দাঁড়াই। তাদের সহযোগিতা করার জন্য সব সময় আমরা প্রস্তুত। আমি ছেলেটার খোঁজ-খবর নেব এবং যতটুকু পারি তাকে সহযোগিতা করবো।

এফএ/এমএস