এবারের গ্রীষ্মে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণ তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে। যুক্তরাজ্য থেকে স্ক্যান্ডিনেভিয়া হয়ে জাপান পর্যন্ত অনেক দেশেই আরও কয়েকদিন এই তাপদাহ অব্যাহত থাকার কথা।
Advertisement
তীব্র তাপমাত্রার কারণে কয়েক হাজার মানুষের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াকে কেন্দ্র করে জাপান কিছুদিন আগে জাতীয় দুর্যোগ অবস্থা ঘোষণা করেছে।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া, পূর্ব কানাডা, আলজেরিয়া ও নরওয়েতে উচ্চ তাপমাত্রা সংক্রান্ত বিভিন্ন নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে এবছর। ওমানে রাতের তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা ওমানের ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার হিসেবে সবচেয়ে বেশী।
সুইডেনের উত্তরাঞ্চলের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরের মেরু এলাকায়। গ্রীসের এথেন্সের কাছে দাবানলে এরই মধ্যে মারা গেছেন অন্তত ৮০ জন।
Advertisement
জুলাই মাসের শুরু থেকে অনেক দেশেই তাদের নিয়মিত গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশী তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে।
গড় তাপমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে যুক্তরাজ্য, স্ক্যান্ডিনেভিয়া (মূলত নরওয়ে আর সুইডেন), পূর্ব কানাডা, পূর্ব সাইবেরিয়ার বেশকিছু এলাকা, জাপান ও কাস্পিয়ান সাগর সংলগ্ন এলাকায়।
তবে স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে স্পেন ও পর্তুগালসহ দক্ষিণ ইউরোপের কয়েকটি অঞ্চল, রাশিয়ায় উত্তর সাইবেরিয়ার কিছু অঞ্চল ও দক্ষিণ আমেরিকার সর্ব দক্ষিণাঞ্চল।
কোপার্নিকাস জলবায়ু পরিবর্তন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী তৈরি করা মানচিত্র অনুযায়ী ইউরোপের সবচেয়ে উষ্ণ জুলাই ছিল ২০১০-য়ে। সেসময় গড়ের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেশী তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হয়।
Advertisement
এবছরের জুলাইও ইউরোপের উষ্ণতম জুলাই মাসগুলোর মধ্যে অন্যতম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার্স ফর এনভায়রনমেন্টাল ইনফরমেশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৮০ সালের পর থেকে পঞ্চম উষ্ণতম জুন মাস ছিল এ বছর।
উষ্ণতম জুন ছিল ২০১৬ সালে। তখন বিশ্বের তাপমাত্রা গড়ের চেয়ে ০.৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশী ছিল। অতিরিক্ত উষ্ণতা ছিল বিশ্বজুড়ে। ওই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশী তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়া টানা ৪২তম জুন এবং টানা ৪০২তম মাস ছিল ২০১৬ সালের জুনে।
বিশ্বের নানা জায়গায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কোনো একটি সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। অবাক করা বিষয় হলো, বর্তমানে একই সময়ে একাধিক তাপদাহ অনুভূত হচ্ছে। তবে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এমনটাও বলছেন না যে প্রতি বছরই এমন তাপদাহ থাকবে। কিন্তু তারা বলছেন মাত্রাতিরিক্ত উষ্ণ আবহাওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন বাড়বে।
টিটিএন/এমএস