বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি বাদল রায় ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ ইস্যু ঘিরে কিছুদিন আগে সরগরম হয়েছিল ফুটবলাঙ্গন। সোহাগের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন বাদল রায়। এটা মে মাসের ২৬ তারিখের ঘটনা। সাবেক ফুটবলাররা এর প্রতিবাদ করেন।
Advertisement
সোহাগ মাধুরী রায়কে (বাদল রায়ের স্ত্রী) ফোন করে বাদল রায়কে ফেডারেশনে আসতে বারণ করেছিলেন। থানায় জিডির পর আত্মপক্ষ সমর্থন করেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক, ‘আমি তার (বাদল রায়ের) স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই বিষয়টি তার স্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। কারণ, তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে উঠতেন।’
সাধারণ সম্পাদকের আত্মপক্ষ সমর্থনের পরও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাফুফে। সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমদে, মহিউদ্দিন মহি, সদস্য আবদুর রহিম ও হারুনুর রশিদকে নিয়ে গঠিত সে কমিটি দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে।
এ অবস্থার মধ্যেই শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাবেক ফুটবলাররা। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতাপ শঙ্কর হাজরা, গোলাম সারোয়ার টিপু, কায়সার হামিদ, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, আবুল হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান খান পিন্টু, শেখ মোহাম্মদ আসলাম ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
Advertisement
সাবেক ফুটবলাররা বাফুফে সাধারণ সম্পাদকের অপসারণ দাবি করছেন। কিন্তু সেই সোহাগকে সঙ্গে নিয়ে এক মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন কয়েকদিন আগে ফারাজ গোল্ডকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এই দ্বিমুখী নীতি নিয়ে প্রশ্ন করলে সাবেক ফুটবলার ওয়াহিদুজ্জামান খান পিন্টুর জবাব, ‘সোহাগকে আমরা আমন্ত্রণ জানাইনি। তিনি নিজের থেকে এসে মঞ্চে উঠে বোঝাতে চেয়েছেন, তার সঙ্গে কোনো ঝামেলা নেই। আমরা তো আর তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে পারি না!’
সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের দাবি, ‘আমন্ত্রিত হয়েই ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। চাইলে আমন্ত্রণপত্রও দেখাতে পারি।’ তদন্ত কমিটি দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। এমনকি সোহাগ দু:খ প্রকাশও করেছেন বাদল রায়ের কাছে। ‘আমি বাদল রায়ের কাছে দু:খ প্রকাশের পর তিনি বলেছিলেন, ‘ওকে। যা হয়েছে এখানেই শেষ।’ তিনি আমার বিরুদ্ধে থানায় করা সাধারণ ডায়েরি তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো সেটা তোলেননি’-বলেছেন আবু নাইম সোহাগ।
সাধারণ ডায়েরি তুলে নিতে চেয়ে কেন নেননি বাদল রায়? এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাফুফের এ সহ-সভাপতি বলেন, ‘সাবেক ফুটবলাররা যে আন্দোলন করছে, তার সুরাহা হলেই সাধারণ ডায়েরি প্রত্যাহার করা হবে। সাবেক ফুটবলার তো সোহাগের বহিষ্কারের জন্য আন্দোলন করছে। আর তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিলেই কি বিচার শেষ হয়ে যায়? এটা নিয়ে তো আরো বড় আন্দোলন হবে।’
সাবেক ফুটবলাররা বলেছেন, এত কিছুর পরও বাফুফের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বহাল রাখা হয়েছে। তারা সোহাগের অপসারণ দাবি করেছেন। তা নাহলে আরো আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন। সোহাগের অপসারণ চেয়ে সাবেক ফুটবলারদের দাবি প্রসঙ্গে বাফুফের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘এটা মীমাংসিত একটা বিষয়। তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা একটি প্রতিবেদনও দিয়েছে। কমিটির রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই নির্বাহী কমিটিতে সিদ্ধান্ত হবে।’
Advertisement
আরআই/এমএমআর/জেআইএম