জাতীয়

এইচএসসির ফল দেখে মেডিকেলের পাশ নম্বর পুনঃনির্ধারণ

চলতি বছর মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর পুণঃনির্ধারিত হতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সুত্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বছর সরকারি বেসরকারি উভয় মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পাশ নম্বর ৪০ বেঁধে দেয়। ন্যুনতম পাস মার্ক পাওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে বহু আসন শূন্য ছিল। এ কারণে পাস নম্বর পুনঃনির্ধারণের চিন্তাভাবনা চলছে।  স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, আগামি রোববার প্রকাশিতব্য এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর তা পর্যালোচনা করার পর এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) নেতারা বলেন, গত বছর  শিক্ষার্থী সংকটে আসন শূন্য থাকায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি চেয়ে সাড়া পাননি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। এক পর্যায়ে শুধুমাত্র প্রাইভেট ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ নম্বর করলেও তবুও ডেন্টাল কলেজে শতকরা ৫০ ভাগ আসনও পূরণ হয়নি। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) আইয়ুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত এক সভায় আগামি ১৮সেপ্টেম্বর সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর পুনঃনির্ধারণ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০ থাকবে নাকি কমানো হবে তা আগামি ৯ আগস্ট প্রকাশিতব্য এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।তারা জানান, গত বছর সরকারি ও বেসরকারি উভয় মেডিকেল কলেজে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০ নির্ধারণ করে দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ভর্তি পরীক্ষায় ৬৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও পাস নম্বর পেয়েছিল ২০ হাজারেরও কম সংখ্যক শিক্ষার্থী। সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী পেতে সমস্যা না হলেও গত বছর বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে কয়েক শ’ আসন শূন্য ছিল। এক  পর্যায়ে ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য ৪০ নম্বরের বাধ্যবাধকতা কমিয়ে ৩০ নম্বর করার ওপর শতকরা ৫০ ভাগ আসন পূরণ হয়নি।বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব হুমায়ুন কবীর বুলবুল জাগো নিউজকে জানান, তারা মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা পৃথকভাবে গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এক সঙ্গে পরীক্ষা নেয়ার ফলে তারা ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী পাচ্ছেন না।বাংলাদেশ মেডিকেল  অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) এর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বিরোধী দলের আন্দোলন কর্মসূচির কারণে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে গত বছরের  তুলনায় ফলাফল খারাপ হয়ে গোল্ডেন জিপিএ, জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমতে পারে। ফলে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করে ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর পুনঃনির্ধারণ হতে পারে বলে জানান তিনি। বর্তমানে দেশে সরকারি বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ১২৭টি। তারমধ্যে সরকারি পর্যায়ে ২৯টি, বেসরকারি ৬৫ ও সেনাবাহিনীর অধীনে ৬টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে ৯টি ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিট ও ১৮টি ডেন্টাল কলেজ  রয়েছে। এগুলোতে মোট আসন সংখ্যা ১০হাজারের বেশি। ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বরের ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল হান্নান বলেন, এখন পর্যন্ত আগের নির্ধারিত পাস নম্বরই থাকবে বলে শুনেছি। তবে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল দেখে তা পরিবর্তন হবে কি-না তাও তিনি জানেননা। এমইউ/এসকেডি/এমএস

Advertisement