বিনোদন

সিনেমাটি মুক্তির পর ভালোও লাগছে খারাপও লাগছে : দীপা খন্দকার

সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ (২৭ জুলাই) মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত ও জয়দীপ মুখার্জি পরিচালিত 'ভাইজান এলো রে' ছবিটি। কলকাতার শীর্ষ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজের ব্যানারে নির্মিত এ ছবিটি সাফটা চুক্তির আওতায় গত ১৬ জুলাই বাংলাদেশে মুক্তির অনুমতি ও এরপরে আনকাট সেন্সর ছাড়পত্র পায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে। এ ছবিতে প্রথমবারের মত অভিনয় করেছেন দর্শক নন্দিত অভিনেত্রী দীপা খন্দকার। সমসাময়িক ব্যস্ততা ও সিনেমা নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন দীপা খন্দকার। তাকে নিয়ে লিখেছেন ইমরুল নূর।

Advertisement

জাগো নিউজ : আপনার অভিনীত প্রথম সিনেমা মুক্তি পেল। অনুভূতি কেমন?দীপা খন্দকার : খুবই ভালো লাগছে আবার খারাপও লাগছে। খারাপ লাগার কারণ হচ্ছে, কিছুদিন আগে আমার শ্বশুর স্ট্রোক করেছেন। গত ১৪ দিন ধরে আমার শ্বশুর ইবনে সিনা হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছেন। এটা নিয়ে পারিবারিকভাবে খুব টেনশন আর দৌঁড়াদৌঁড়িতে আছি। এই মানুষটা সবসময় সবকাজে আমাকে সাপোর্ট করেছেন। আমার সিনেমা মুক্তি নিয়ে উনার অনেক প্ল্যান ছিল। সবাইকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাবেন।

জাগো নিউজ : এখন শারীরিক অবস্থা কেমন? দীপা খন্দকার : শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। তিনি আমাকে সবসময় সাপোর্ট করতেন,আমাকে উৎসাহ দিতেন। আমি যখন সিনেমার শ্যুটিংয়ে কলকাতা, লন্ডন যেতাম তখন আমাকে অনেক পরামর্শ দিতেন। অনেকে বলেন বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি থেকে মিডিয়াতে কাজ করতে দিতেন না। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে একদমই উল্টো। আমার শ্বশুর মঞ্চ নাটক, সিনেমায় কাজ করতেন। এখন আমার সিনেমা মুক্তি পেল কিন্তু তিনি অসুস্থ এটা খুব খারাপ লাগছে।

জাগো নিউজ : গেলো ঈদে ছবিটি কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে। এরপর আপনি কলকাতায়ও গিয়েছিলেন। তখন সিনেমাটি দেখা হয়েছিলো কি?দীপা খন্দকার : না। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু ছবি দেখিনি। কলকাতায় যাওয়ার আগে আমি জেনেছিলাম ছবিটি আমাদের দেশে মুক্তি পাবে। আমার দেশের মানুষদের সঙ্গে ছবিটি দেখবো বলে তখন সেখানে ছবিটি দেখিনি। তবে বাংলাদেশে মুক্তি না পেলে হয়তো দেখতাম।

Advertisement

জাগো নিউজ : ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিতে অভিনয়ের পুরো জার্নিটা কেমন ছিল?দীপা খন্দকার : এক কথায় যদি বলি, অসম্ভব ভালো ছিল। আমরা যারা অভিনয় করি তারা সবসময়ই চাই এমন কিছু কাজ করতে চাই যে কাজটা করলে আত্মতৃপ্তি পাই, দর্শকরাও মনে রাখে। ভাইজান এলো রে তেমনি একটা কাজ। কাজটা করে আমি খুবই তৃপ্ত। আর কলকাতার মানুষজন,পুরো টিম,ইউনিটের সবাই ভীষণ হেল্পফুল।

জাগো নিউজ : কলকাতার সহশিল্পীদের থেকে কতটুকু সহায়তা পেয়েছেন?দীপা খন্দকার : শুধু সহশিল্পী না ইউনিটের প্রত্যেকেই ভীষণ হেল্পফুল। তারা সবসময় শুধু কাজটাকে নিয়েই ভাবে,গুরুত্ব দেয়। আমাদের দেশে একটা চরিত্রে অভিনয় করতে গেলে নিজের চরিত্র, মেকাপ, গেটাপ, লুক সবকিছু নিয়ে নিজেকেই ভাবতে হয়, প্রস্তুতি নিতে হয়। কিন্ত কলকাতায় কাজ করে দেখলাম,আমার হোটেল থেকে শ্যুটিং স্পটে পৌঁছানো, ফেরা, গেটাপ, লুক, মেকাপ সবকিছু তাদের টেনশন। আমার কাজ শুধু চরিত্রটা নিয়ে ভাবা আর বেস্ট আউটপুট দেয়া।

জাগো নিউজ : প্রথমবারের মত শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করলেন। অভিজ্ঞতাটা কেমন? সহশিল্পী হিসেবে কেমন?দীপা খন্দকার : দুর্দান্ত। শাকিবের সঙ্গে কাজ করে মনেই হয়নি যে তার সঙ্গে প্রথম কাজ করছি। নাটকের দিক থেকে আমি শাকিবের সিনিয়র। দেশের শীর্ষ নায়ক হয়েও সে আমাকে সবসময় আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিয়েছে, রেসপেক্ট করেছে। আমি দাঁড়িয়ে থাকলে সে কখনো আমার সামনে বসেনি। আমাকে বসার ব্যবস্থা করে দিয়ে তারপর সে বসতো। ব্যক্তি হিসেবে শাকিব কেমন সেটা হয়তো আমি বলতে পারবো না তবে কাজের ক্ষেত্রে শাকিব অনেক সিরিয়াস। সহশিল্পীদের যথেষ্ট মূল্যায়ন করে।

জাগো নিউজ : ছবিতে আপনার চরিত্রটা সম্পর্কে জানতে চাই। শাকিব খানের বোন হিসেবে আপনার চরিত্রের গুরুত্ব কতটুকু?দীপা খন্দকার : আমার চরিত্রের নাম 'অরুণীমা' শাকিবের বড় বোন। আমি বড় বোন হিসেবে শাকিবকে সবকাজে সাপোর্ট করি। আমার স্বামী খুবই লোভী থাকে,আমাদের সম্পত্তির জন্য অনেক ঝামেলা করে, শাকিবকে মারধর করে। পুরোপুরি একটা ফ্যামিলি প্যাকেজ। ছবিতে ভাই-বোনের গল্পটাই মুখ্য।

Advertisement

জাগো নিউজ : কলকাতায় মুক্তি পাওয়ার পর সেখানে ছবিটি কেমন চলেছে, খোঁজ নিয়েছেন?দীপা খন্দকার : হ্যা খোঁজ নিয়েছি। কলকাতায় ছবি নিয়ে অনেক প্রতিযোগিতা করতে হয়। বলিউডের ছবির সঙ্গে তাদের কম্পিটিশন করতে হয়। আমি যতটুক জেনেছি, এ পর্যন্ত শাকিবকে নিয়ে তারা যতগুলো ছবি করেছেন তার মধ্যে ‘ভাইজান এলো রে’ খুব ভালো চলছে।

জাগো নিউজ : আপনি কবে ছবিটি দেখবেন?দীপা খন্দকার : যেহেতু শ্বশুরের অসুস্থতা নিয়ে পারিবারিকভাবে একটু ব্যস্ত আছি তাই ফার্স্ট শো তো দেখা হবে না। তবে এই সপ্তাহেই সাংবাদিক ও পরিবারের সবাইকে নিয়ে ছবিটি দেখতে যাব।

জাগো নিউজ : আগামীতে কি আপনাকে আবারও বড় পর্দায় দেখতে পাবো ?দীপা খন্দকার : ইচ্ছে তো আছে। সেক্ষেত্রে চরিত্রটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সিনেমায় চরিত্রে যতটুক গুরুত্ব পেয়েছি, আত্মতৃপ্তি পেয়েছি তেমন চরিত্র পেলে অবশ্যই কাজ করবো। সেটা বাংলাদেশেরই হোক বা কলকাতার।

আইএন/এমএবি/এমএমজেড/এমএস