অব্যাহত শিডিউল বিপর্যয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হজযাত্রীরা। চলতি বছর হজ ফ্লাইট শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন্সের কিছু ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা করে বিলম্বে ছাড়ছে ফ্লাইটগুলো। পাসপোর্ট-টিকিট দেরিতে হাতে পাওয়া, ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হতে দেরি হওয়া ফ্লাইট বিলম্বের মূল কারণ বলে জানিয়েছেন এজেন্সির মালিকরা। নির্দিষ্ট সময়ে ইমিগ্রেশন শেষ করতে পারছেন না অনেক হজযাত্রী। তবে বিলম্ব হলেও একজন হজযাত্রীকেও ফেলে যাচ্ছে না এয়ারলাইন্সগুলো।
Advertisement
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের একজন কর্মকর্তা বলেন, হজযাত্রী পরিবহন করা হয় ডেডিকেটেড ফ্লাইট দিয়ে। শিডিউল ফ্লাইট হলে সমস্যা হতো। হজযাত্রীরা সঠিক সময়ে আসতে না পারলে তাদের জন্য ফ্লাইট বিলম্ব করবে এটাই স্বাভাবিক।
বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘুরে দেখা যায়, ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করছেন নাটোরের রবিউল আলম। তিনি জানান, ৩টা ৫৫ মিনিটে ফ্লাইট ছাড়ার সময় থাকলেও জানানো হয় বিমানের ওই ফ্লাইটটির কমপক্ষে এক ঘণ্টা দেরি হতে পারে।
এর আগে বুধবারও দুটি ফ্লাইট বিলম্বে ছাড়ে। তার আগের দিন মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার একটি ফ্লাইট তিন ঘণ্টা দেরিতে বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। আর ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার ফ্লাইট সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেদ্দার উদ্দেশে ছাড়ে।
Advertisement
সোমবার বিজি-৭০৩৩ ফ্লাইট ভোর ৪টা ৩৫ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দর ছাড়ার কথা থাকলেও তা সকাল সাড়ে ৭টায় ছেড়ে যায়। রোববার বাংলাদেশ বিমানের সকাল ও বিকালের দুটি ফ্লাইটে শিডিউল বিপর্যয় হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন আট শতাধিক হজযাত্রী। এভাবে প্রতিদিন দুর্ভোগের কবলে পড়ছেন হজযাত্রীরা।
হজযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই দুর্ভোগকে তারা হাসিমুখে মেনে নিচ্ছেন। হজযাত্রী আজিজুর রহমান বলেন, যাচ্ছি আল্লার সঙ্গে দেখা করতে। এ সময় কষ্ট পেলেও মনে দুঃখ নেই।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, হজযাত্রীদের উত্তম সেবা দিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনবল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সবাই আন্তরিক। হজ ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকে। প্রথমত নানা কারণে হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন বিলম্বিত হয়। আবার সৌদি আরব থেকে ফ্লাইট ফিরতে দেরি হওয়াও বিলম্বের একটি বড় কারণ।
উল্লেখ্য, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন হজ পালন করতে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৬ হাজার ৭৯৮, আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন। এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫২৮টি এজেন্সি হজের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৮৭টি ফ্লাইট ৬৪ হাজার ৯৬৭ এবং সৌদি এয়ারলাইন্সের ১৮৮টি ফ্লাইট ৬১ হাজার ৮৩১ জন যাত্রী পরিবহন করবে। হজের শেষ ফ্লাইট ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবে ১৫ আগস্ট।
Advertisement
আরএম/জেডএ/জেআইএম